হল না ছাড়ার ঘোষণা শিক্ষার্থীদের, ভিসির পদত্যাগ দাবিতে উত্তাল শাবি
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের জেরে পুলিশ-শিক্ষার্থী সংঘর্ষের ঘটনার পর অনির্দিষ্টকালের জন্য হল বন্ধের ঘোষণা দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কিন্তু এই ঘোষণা প্রত্যাহার করে উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমদের পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলন শুরু করেছেন শিক্ষার্থীরা। তাদের অভিযোগ, ভাইস-চ্যান্সেলরের (ভিসি) নির্দেশেই পুলিশ হামলা ও গুলি চালিয়েছে। রোববার রাত ৮টার ঘোষণা দেওয়া হয় যে সোমবার দুপুর ১২টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগ করতে হবে। আন্দোলনকারী একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, তারা বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের সিদ্ধান্ত মানেন না। এ ছাড়া বাইরে থেকে পুলিশ এনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করানোয় তারা উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি করছেন। তারা কোনোভাবেই ক্যাম্পাস ত্যাগ করবেন না। এর আগে গতকাল রোববার বিকেলে উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করলে পুলিশ আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর লাঠিচার্জ, রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেড মেরে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এতে শিক্ষার্থী ও শিক্ষক আহত হন। এ পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ক্যাম্পাস বন্ধ ঘোষণা করে। সোমবার দুপুর ১২টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রশাসনের এমন ঘোষণার পরে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের তিনটি গ্রুপ তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ জানিয়ে প্রথমে বঙ্গবন্ধু হলের সামনে পরে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সংহতি জানান। বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণার বিষয়ে উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমদ তার বাসভবনে রাত সাড়ে ৮টার দিকে সংবাদমাধ্যমকে বলেন, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তাই শিক্ষার্থীদের কাল সোমবার দুপুর ১২টার মধ্যে হল ত্যাগ করতে হবে। বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হল প্রভোস্ট বডির পদত্যাগসহ তিন দফা দাবি ও অবস্থান কর্মসূচিতে হামলার প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ঘটনার সূত্রপাত। রোববার (১৬ জানুয়ারি) চতুর্থ দিনের মতো আন্দোলন করছিলেন শিক্ষার্থীরা। তবে বিকেলের পর থেকে উত্তপ্ত হয়ে পড়ে ক্যাম্পাস। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ প্রধান রাস্তা ‘কিলো সড়ক’ অবরোধ করে স্লোগান দিতে থাকেন। প্রাধ্যক্ষ ও সহকারী প্রাধ্যক্ষদের পদত্যাগ চেয়ে প্ল্যাকার্ড হাতে অনেক ছাত্রী অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কয়েক’শ শিক্ষার্থী এ আন্দোলনে যোগ দেন। এ সময় শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সব বিভাগের ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনেরও ঘোষণা দেন।