সাংবাদিক তুরাব হত্যা মামলার আসামি ওসি মঈনকে ছেড়ে দেয়ায় সিলেট ক্ষোভ।
শহীদ সাংবাদিক এটিএম তুরাব হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবিতে ও সাবেক ওসি মঈনকে ছেড়ে দেওয়ার প্রতিবাদে সিলেটের সংবাদকর্মীরা সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ (এসএমপি) কার্যালয়ের সামনে বুধবার দুপুরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হয়।
শহীদ তুরাবের হত্যার ৬ নং আসামি এসএমপির কোতোয়ালী থানার সাবেক ওসি মঈন উদ্দিন সিপনকে আটকের পর ছেড়ে দেওয়া সাংবাদিকরা ক্ষোভ প্রকাশ করে অবস্থান কর্মসূচি পালনকালে বক্তারা বলেন, অবিলম্বে হবিগঞ্জে পুলিশ সুপার (এসপি) ও মাধবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কে অপসারণ করুন এবং কোতোয়ালী থানার সাবেক ওসি মঈনসহ তুরাব হত্যা আসামীদের গ্রেফতার করুন। বাংলাদেশের ইতিহাসে পুলিশের গুলিতে সিলেটে সাংবাদিক নিহতের ঘটনা এই প্রথম। এই ঘটনায় আমরা হতভম্ব, বিস্মিত ও গভীর শোকাহত এবং সেই সাথে ক্ষুব্ধ। এ ঘটনায় সাংবাদিক তুরাবের পরিবারের পক্ষ থেকে ১৯ আগস্ট আদালতে হত্যা মামলা দায়ের করলেও এখন পর্যন্ত এর কোনো অগ্রগতি নেই। উপরন্তু এ মামলার ৬ নং আসামি, ঘটনার সময়ের সিলেট কোতোয়ালি থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মঈন উদ্দিন সিপনকে তার বাড়িতে অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র মজুত রাখার অভিযোগে রবিবার দিবাগত রাতে বিজিবি আটক করেছিলো। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখজনকভাবে একটি হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি হওয়া সত্ত্বেও পরদিন দুপুরে পুলিশ তাকে ছেড়ে দেয়। এতে আমরা চরম ক্ষোভ প্রকাশ করছি। পাশাপশি তুরাব হত্যাকাণ্ডে জড়িত এসএমপি’র সাবেক কর্মকর্তা আজবাহার আলী শেখ ও গোলাম কাওসার দস্তগীরসহ সকল আসামিকে অবিলম্বে দ্রুততম সময়ের মধ্যে গ্রেফতার করার জোর দাবি জানাচ্ছি। তা না হলে সিলেটের সাংবাদিকরা কঠোর কর্মসূচির ডাক দিতে বাধ্য হবেন।
অবস্থান কর্মসূচি থেকে আগামীকাল বৃহস্পতিবার জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে বর্তমান অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের প্রধান, স্বরাষ্ট্র ও উপদেষ্টা আইন উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি প্রদানের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
বাংলাদেশ ফটো জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন (বিপিজেএ) সিলেট বিভাগীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. নুরুল ইসলামের পরিচালনায় অবস্থায় কর্মসূচিতে একাত্মতা পোষন করে বক্তব্য রাখেন সিলেট মহানগর জামায়াতের আমীর মুহাম্মদ ফখরুল ইসলাম ও মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরী।
সাংবাদিক নেতৃবৃন্দের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সিলেট প্রেসক্লাবের সভাপতি ইকরামুল কবির, সিনিয়র সহ-সভাপতি ও সিলেট মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক খালেদ আহমদ, সিলেট প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম, সিলেট মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি ও দৈনিক নয়াদিগন্তের ব্যুরো প্রধান আব্দুল কাদির তাপাদার, সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাবের সভাপতি গোলজার আহমদ হেলাল, বাংলাদেশ ফটো জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন (বিপিজেএ) সিলেট বিভাগীয় কমিটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আতাউর রহমান আতা, সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সাইফুর রহমান তালুকদার, বিপিজেএ সিলেটের সহ-সভাপতি হুমায়ুন কবির লিটন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক এ এইচ আরিফ, সিলেটভিউ২৪ডটকম’র নিউজ ইনচার্জ ও সিলেট জেলা প্রেসক্লাব সদস্য মো. রেজাউল হক ডালিম, সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাবের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য আব্দুল হাসিব।
কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন দৈনিক খবরের ব্যুরো প্রধান এম এ মতিন, বিপিজেএ সিলেটের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আশকার ইবনে আমিন লস্কর রাব্বী, সহ-সাধারণ সম্পাদক শাহীন আহমদ, সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি আব্দুল মুহিত দিদার, মাই টিভি সিলেট প্রতিনিধি মিনাল কান্তি দাস, দৈনিক ইনফো বাংলা সিলেটের ব্যুরো প্রধান উৎফল বড়ুয়া, বিপিজেএ সিলেটের ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক রেজা রুবেল, সদস্য আজমল আলী, দক্ষিণ সুরমা প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি সাহেদ আহমদ শান্ত, জাবেদ ইমরান, রেজওয়ান আহমদ, রুবেল মিয়া, আশরাফ উল্লাহ ইমন, শহিদুল ইসলাম সবুজ, রাহেল চৌধুরী তারেক, সবুজ আহমদ, জাকির আহমদ, বাবর জোয়ারদার, ফয়সল আহমদ প্রমুখ।
অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে এসএমপি পুলিশ কমিশনার রেজাউল করিমের পক্ষে উপ-পুলিশ কমিশনার সদর ও প্রশাসন তোফায়েল আহমদ সাংবাদিকদের আশ্বাস প্রদান করেন দ্রুততম সময়ের মধ্যে এটিএম তুরাবের হত্যারকারীদের আটক করার। তার আশ্বাসের প্রেক্ষিতে অবস্থান কর্মসূচি প্রত্যাহার করা হয়।
উল্লেখ্য, গত ১৯ জুলাই সিলেটের সাবেক কোট পয়েন্ট বর্তমান তুরাব চত্তরে বিএনপির মিছিল চলাকালে পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সাংবাদিক এ টি এম তুরাব। গত ১৯ আগস্ট তুরাবের বড় ভাই সিলেট আদালতে হত্যা মামলা দায়ের করেন।