Sobujbangla.com | পাকিস্তানে ভারতের হামলা হামলার ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে পরস্পর বিরোধী বক্তব্য
News Head

পাকিস্তানে ভারতের হামলা হামলার ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে পরস্পর বিরোধী বক্তব্য

  |  ০৯:০৪, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০১৯

পাকিস্তানের ভেতরে ঢুকে কথিত জঙ্গি আস্তানায় ভারতীয় বিমান হামলার ব্যাপারে দুটো দেশ ভিন্ন ভিন্ন বক্তব্য দিচ্ছে। দিল্লি বলছে, তাদের এই আকস্মিক অভিযানে তারা জইশ-ই-মোহাম্মদের বহু সদস্যকে হত্যা করেছে।
কাশ্মীরে ভারতীয় সৈন্যদের ওপর আরো জঙ্গি হামলা চালানো হতে পারে – এই সন্দেহেই তারা জঙ্গি গ্রুপটির ওপর হামলা চালিয়েছে।
অন্যদিকে পাকিস্তান বলছে, খোলা মাঠে চালানো এই হামলায় কেউ হতাহত হয়নি। পাকিস্তানের ভেতরে ভারত-বিরোধী জঙ্গিরা তৎপর – দিল্লির এই অভিযোগও অস্বীকার করেছে ইসলামাবাদ।
পাকিস্তান বলছে, তারাও সময় মতো এই হামলার জবাব দেবে। দুটি দেশের প্রতি সংযম প্রদর্শনের আহবান জানিয়েছে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন এবং চীন।
হামলা নিয়ে ভারত ও পাকিস্তানের বক্তব্য
#ভারত বলছে, ভারতীয় সময় রাত সাড়ে তিনটের সময় বেশ কিছু ভারতীয় ফাইটার জেট (প্রধানত মিরাজ ২০০০, সম্ভবত সংখ্যায় বারোটি) কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণ রেখা পেরিয়ে পাকিস্তানের দিকে ঢোকে।
#দিল্লির দাবী তাদের আক্রমণের নিশানা ছিল খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের বালাকোটের কাছে জইশ-ই-মোহাম্মদের একটি প্রশিক্ষণ শিবির। পাহাড়ি এলাকায় এই শিবিরটি নিয়ন্ত্রণ রেখা থেকে প্রায় আশি কিলোমিটার দূরে।
#মোটামুটি একুশ মিনিটের মতো ভারতীয় বিমানগুলো পাকিস্তানের আকাশ-সীমার ভেতরে ছিল বলে ভারতের দাবি।
#কিছুক্ষণের মধ্যেই পাকিস্তানি বিমান বাহিনীর কয়েকটি বিমান ভারতীয় বিমানগুলোকে পাল্টা ধাওয়া করে। তবে ভারতীয় বিমানগুলোর সবই অক্ষত অবস্থায় দেশে ফিরেছে।
#দেশে ফেরার আগে ভারতীয় জেটগুলো তাদের বয়ে নিয়ে যাওয়া বোমা পাকিস্তানের মাটিতেই ফেলে এসেছে। তবে পাকিস্তান বলছে, তাদের তাড়া খেয়ে ভারতীয়রা খোলা জায়গাতেই ওসব ফেলে পালিয়েছে – আর ভারতের বক্তব্য, সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতেই সফলভাবে বোমাবর্ষণ করা হয়েছে।
#একাত্তরের যুদ্ধের আটচল্লিশ বছর পর এই প্রথম পাকিস্তানের আকাশ-সীমার ভেতর ভারত ও পাকিস্তানের যুদ্ধবিমান পরস্পরের মুখোমুখি হল। বছর কুড়ি আগে কার্গিলের যুদ্ধে ভারত অন্তত ঘোষিতভাবে পাকিস্তানের আকাশ-সীমা লঙ্ঘন করেনি।
এখনও যা নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি
#বালাকোটে জইশ-ই-মোহাম্মদের শিবিরে কতটা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, বা আদৌ হয়েছে কি না।
#পাকিস্তান থেকে গণমাধ্যম কর্মীরা জানাচ্ছেন, ঘটনার পর পরই জাব্বা টপ পাহাড়ের আশেপাশের এলাকা নিরাপত্তা বাহিনী ঘিরে ফেলেছে ও কাউকে সেখানে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না বলে স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তারা তাদের নিশ্চিত করেছেন। ফলে পাহাড় চূড়ায় ঠিক কী ঘটেছে তা এখনও বিশেষ কিছু জানা যায়নি।
#এই হামলায় কত লোক মারা গেছেন সেটা নিয়েও অস্পষ্টতা আছে। ভারত দাবি করছে, `বহু জঙ্গি সদস্য` হতাহত হয়েছে – যদিও নির্দিষ্টভাবে কোনও সংখ্যা উল্লেখ করা হয়নি। তবে ভারতের সামরিক সূত্রগুলো বিভিন্ন ভারতীয় চ্যানেলের কাছে অন্তত `দুশো থেকে তিনশো প্রাণহানি`র দাবি করেছে।
#পাকিস্তান এখনও পর্যন্ত এই হামলায় একটি মৃত্যুর কথাও স্বীকার করেনি। ফলে একপক্ষের দাবি দুশো থেকে তিনশো নিহত – অন্য দিকে আর এক পক্ষের দাবি প্রাণহানি শূন্য! এই জায়গায় একটা বিরাট ধোঁয়াশা আছে।
#বালাকোটের এই অভিযান ভারতীয় বিমান বাহিনীর `ওয়ান-অফ অ্যাটাক` ছিল, না এর পরে আরও হামলা চালানোরও প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে – সেটাও স্পষ্ট নয়। ভারতীয় সেনা সূত্রে শুধু এটুকুই বলা হচ্ছে, পাকিস্তানের মাটি থেকে তাদের বিরুদ্ধে জঙ্গি হামলা চালানোর প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে সেই খবর পেলে আবার অভিযান চালাতে এতটুকুও দ্বিধা করা হবে না। কিন্তু ইসলামাবাদ বলছে, পাকিস্তানের ভেতরে ভারতবিরোধী কোন গ্রুপ সক্রিয় নেই।
#পাকিস্তান কীভাবে এই বালাকোট হামলার প্রত্যুত্তর দেবে, সেটাও এখনও কিছু জানা নেই। পাকিস্তানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কুরেশি শুধু বলেছেন, সমুচিত জবাব দেওয়া হবে।
#ভারতীয় সেনার `অপারেশন বালাকোট` দুই দেশের মধ্যে একটি পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধে গড়াবে কি না, সেই উত্তরও এখনও অজানা। দুই দেশের সেনারা শেষবারের মতো মুখোমুখি সংঘাতে জড়িয়েছে ১৯৯৯ সালে, কার্গিলে। যদিও সেটাকে অনেকেই পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধ বলে মানতে চান না। বর্তমান সংঘাত পরমাণু যুদ্ধ পর্যন্ত যাবে কি না, তা নিয়েও আশঙ্কা রয়েছে অনেকেরই।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ