রোহিঙ্গাদের জন্য তহবিল বাড়াতে ইউএনডিপির প্রতি আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর।
রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সহায়তায় বৃহত্তর আন্তর্জাতিক তহবিল সংগ্রহের উদ্যোগ নিতে জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সোমবার রাজধানীর একটি হোটেলে ইউএনডিপির শুভেচ্ছা দূত ও সুইডেনের ক্রাউন প্রিন্সেস ভিক্টোরিয়ার সঙ্গে বৈঠকে এ আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। বৈঠকে রোহিঙ্গা ইস্যু ছাড়াও জলবায়ু পরিবর্তনসহ বিভিন্ন দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। ইউএনবির খবর। শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ মানবিক কারণে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে এবং প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করে ভাষানচরে তাদের জন্য উন্নত আবাসনের ব্যবস্থা করেছে। প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগের জন্য সুইডিশ ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানান। সাক্ষাৎ শেষে প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ মানবিক কারণে মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে এবং তাদের জন্য অনেক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করে ভাসানচরে তাদের জন্য উন্নত আবাসনের ব্যবস্থা করেছে। এখন ভাসানচরে এক লাখ রোহিঙ্গা বসবাস করতে পারে। তিনি ভাসানচরে আরও রোহিঙ্গাদের স্থানান্তরে ইউএনডিপির সহায়তা কামনা করেন। চার দিনের সফরে সোমবার ঢাকায় পৌঁছান প্রিন্সেস ভিক্টোরিয়া। এ সফরের অংশ হিসেবে কক্সবাজার ও ভাসানচরে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করবেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে জলবায়ু পরিবর্তনসহ দ্বিপক্ষীয় ও বহুপাক্ষিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। প্রিন্সেস বলেন, সুইডেন ও বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও গভীর করার বিশাল সুযোগ রয়েছে। দু’দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদারে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। এসময় সুইডেনের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলসহ বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগের আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের ভয়াবহ শিকার। কার্বন নিঃসরণে বাংলাদেশের অবদান নগণ্য হলেও দেশটি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশ বন্যা, ঘূর্ণিঝড়ের মতো বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের সম্মুখীন হচ্ছে। স্থানীয় জলবায়ু অভিযোজন ও প্রশমন কর্মসূচি সম্পর্কে তিনি বলেন, স্থানীয় জনগোষ্ঠী এবং তাদের জীবন-জীবিকার সুরক্ষার জন্য বাংলাদেশ জলবায়ু ট্রাস্ট তহবিল গঠন করেছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকারের প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে দারিদ্র্য বিমোচন। ইতোমধ্যে দারিদ্র্যের হার ৪১ শতাংশ থেকে ১৮ দশমিক ৭ শতাংশে এবং চরম দারিদ্র্যের হার ২৫ দশমিক ১ শতাংশ থেকে ৫ দশমিক ৬ শতাংশে নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে সরকার। তিনি বলেন, বাংলাদেশে কোনো গৃহহীন মানুষ যাতে না থাকে সেজন্য সরকার সারাদেশে গৃহহীনদের বিনামূল্যে ঘূর্ণিঝড় প্রতিরোধী ঘর করে দিচ্ছে। এ ছাড়া তার সরকার উপকূলীয় এলাকায় ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ করেছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।