Sobujbangla.com | দেখা যায় ঢাকায় পরিবার প্রতি খাবারে ব্যয় মাসে ২২ হাজার ৬৬৪ টাকা।
News Head

দেখা যায় ঢাকায় পরিবার প্রতি খাবারে ব্যয় মাসে ২২ হাজার ৬৬৪ টাকা।

  |  ২০:৫৩, মার্চ ২৭, ২০২৩

অভ্যন্তরীণ বাজার নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতা বেশি দায়ী বলে মনে করে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ (সিপিডি)।  সোমবার রাজধানীর ধানমন্ডিতে সিপিডির সম্মেলন কক্ষে ‘জাতীয় বাজেট ২০২৩-২৪: সিপিডি’র সুপারিশমালা’ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে একথা বলা হয়।   সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন এ বিষয়ে তার পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেন। তার ভাষ্য, অন্যান্য উন্নয়নশীল বা শিল্পোন্নত দেশের তুলনায় বাংলাদেশে চাল, চিনি, সয়াবিন তেল ও গরুর মাংসের মতো বেশ কিছু নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেশি। খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ বাংলাদেশ অথচ আমাদের প্রধান খাদ্য চালের দাম প্রতিবেশী সব দেশের চেয়ে বেশি। আর তেল, গরুর মাংস কিংবা চিনির মতো অনেক পন্যের যা দাম তো আমেরিকা এবং ইউরোপের চেয়েও অনেক বেশি।   সব মিলিয়ে দেশে সার্বিক মূল্যস্ফিতি ২৫ শতাংশের কম নয়, বলছে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সিপিডি। এতেই ঢাকায় চার সদস্য নিয়ে চলা এক পরিবার আমিষ খেলে, গুনতে হচ্ছে ২২ হাজার টাকার বেশি। যা ২০১৯ সালে ছিলো ১৫ হাজারের ঘরে।  সিপিডি জানায়, রাজধানী ঢাকায় চার সদস্যের একটি পরিবারের খাবারের পেছনে প্রতি মাসে খরচ হচ্ছে ২২ হাজার ৬৬৪ টাকা। আর খাদ্যতালিকা থেকে মাছ-মাংস বাদ দিয়ে ছোট করলে ব্যয় দাঁড়ায় ৭ হাজার ১৩১ টাকা। কিন্তু নিম্ন এবং মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষের যে আয় তা দিয়ে খাদ্যপণ্য কিনে টিকে থাকা কঠিন। মাছ, মাংস, চাল, ডাল, তেল, মরিচ, হলুদ, আদা, রসুনসহ ১৭টি পণ্যের প্রতিদিনের বাজারদর এবং একজন মানুষ গড়ে কী পরিমাণ খাদ্য গ্রহণ করে, এর ওপর ভিত্তি করে হিসাব করেছে। সিপিডি বলছে, সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারে আয়ের ৬০ শতাংশ খাবারের পেছনে ব্যয় হয়। ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির জন্য সব খাতের নিম্নআয়ের মানুষ ও অনেক পরিবার তাদের চাহিদা মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে। তাই অনেকেই তাদের খাবারের তালিকা থেকে মাংস ও মাছ বাদ দিচ্ছেন। এছাড়া আন্তর্জাতিক বাজারে অনেক পণ্যের দাম কমলেও বাংলাদেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম কমছে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি। তিনি জানান, আমদানি করা অন্তত ২৮টি নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যের ক্ষেত্রে উচ্চ হারে কর দিতে হয়। তার পরামর্শ, এক্ষেত্রে ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতির প্রেক্ষাপটে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের উচিত আমদানি করা খাদ্যপণ্যসহ অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে পাওয়া পণ্যের ওপর শুল্ক ও করহার কমানো, যাতে স্বল্প ও সীমিত আয়ের ভোক্তাদের কিছুটা স্বস্তি দেওয়া যায়। দেশের সামষ্টিক অর্থনীতির হালচাল বিশ্লেষণ করে সিপিডি আরও জানালো, এলএনজি, তুলা, সার, গম, ভোজ্যতেল, জ্বালানি তেলসহ নানা পণ্যের দাম আন্তর্জাতিক বাজারে কমেছে ১৬ থেকে ৫৯ শতাংশ পর্যন্ত। অথচ দেশের বাজারে এর প্রতিফলন নেই। সংস্থার মতে ক্রেতাদের নাভিশ্বাস উঠার এই সময়ে আগামী বাজেট তৈরি করতে সাধারণ মানুষের স্বার্থ ঘিরে।  সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, গরিব ও সীমিত আয়ের মানুষ সবচেয়ে বেশি কষ্টে আছে। দ্রব্যমূল্য পরিস্থিতি সামাল দিতে বেসরকারি খাতে ৫ শতাংশ বেতন বৃদ্ধি করা উচিত। পারলে এই ঈদেই বেতন-ভাতা বাড়ানো যেতে পারে। এছাড়া জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধির ফলে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রায় ব্যাপকভাবে প্রভাব ফেলছে। তাই সব খাতের ন্যূনতম মজুরি বাড়ানো উচিত।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ