সিলেট ওসমানী বিমানবন্দরে যাত্রী হয়রানি নিয়ে গণশুনানি।
যাত্রী হয়রানি লাঘবসহ আরও উন্নত সেবা প্রদানের লক্ষ্যে সিলেট এমএজি ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে। গণশুনানি করেন এমএজি ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পরিচালক মো. হাফিজ আহমদ। সোমবার সকাল ১১টায় বিমানবন্দরের কনফারেন্স হলে গণশুনানির আয়োজন করা হয়। এ সময় ম্যানচেস্টারের ফ্লাইটের যাত্রী সাফি বলেন, অন্যান্য দেশের বিমানবন্দরের মতো আমাদের দেশেও বিমানবন্দরগুলোতে উষ্ণ আতিথেয়তা লক্ষ্য করা যায়। তবে আরেকটু ভাল ব্যবহার সকলেই আশা করেন। কেননা, সবাই একজন যাত্রীর লাগেজ চেক করবেন, এটা হতে পারে না। তদারকির নামে যেন এ বিমানবন্দরে যাত্রীদের হয়রানি না করা হয়। নাম প্রকাশ না করে আরেক যাত্রী বলেন, ব্রিটেনে তার ইউনিভার্সিটি পড়ুয়া দুই ছেলেকে নিয়ে দেশে বেড়াতে আসেন। আজ যখন বিমানবন্দরে প্রবেশ করছিলেন, তখন দারোয়ান তাদের আটকে রাখেন। তখন তিনি বলেন, তাদেরকে দেখে কি যাত্রী মনে হয় না? তিনি সঙ্গে থাকার পরও তাদের হয়রানি করা হয়। বিমানবন্দরে এমন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা যেন না হয়, সে বিষয়ে অনুরোধ জানান তিনি। সিলেট প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম বলেন, ওসমানী বিমানবন্দরে এপ্রোচিংয়ে সমস্যা রয়েছে। এক যাত্রীর লাগেজ কাটার অভিযোগ পেয়েছিলাম। তবে তিনি প্রতিকার পাননি। তাছাড়া একজন বিমানযাত্রীকে কেন প্রশ্নবাণে করে জর্জরিত করা হবে? এছাড়া উপস্থিত সাংবাদিক ও যাত্রীদের অনেকে বলেন, বিমান বন্দরের পার্কিংস্থলে যাত্রীদের নিয়ে টানা হেঁচড়া, এমনকি অনেকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত হওয়ার অভিযোগ রয়েছে। সে বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। সাংবাদিক নাসির উদ্দিন বলেন, ওসমানী বিমানবন্দরে স্বর্ণ চোরাচালান রোধে পদক্ষেপ নেওয়া হলেও স্থানীয়ভাবে চোরাচালানের সঙ্গে জড়িতদের খুঁজে বের করার পদক্ষেপ পরিলক্ষিত হচ্ছে না। এসব বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটে যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। এসব বিষয়ে বিমানবন্দর পরিচালক হাফিজ আহমদ বলেন, বিমানবন্দরে আগে বিভিন্ন সমস্যা ছিল। আনসারদের বিরুদ্ধে টাকা নেওয়ার অভিযোগ ছিল। তবে সেটা এখন নেই। তাছাড়া বিমান ল্যান্ডিং থেকে বেল্টের যে দূরত্ব সেখানে লাগেজ কাটার মতো সুযোগ নেই। পাশাপাশি মালামাল যখন বেল্টে আসে, তখন শকুন দৃষ্টিতে এপিবিএন সদস্যরা কর্তব্য পালন করে থাকেন। সেই সঙ্গে গোয়েন্দা তদারকি তো রয়েছেই। তবে বাইরে পার্কিং জোনে যাত্রী হয়রানির বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নিতে এবং যাত্রীদের সঙ্গে ভাল ব্যবহারের জন্য চালকদের সঙ্গে মতবিনিময় করার জন্য এপিবিএন কর্মকর্তাকে পরামর্শ দেন। অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটে বেসরকারি এয়ারলাইন্সগুলোতে টিকিটের বেশি দাম আদায়ের বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা সংশ্লিষ্টদের কাছে লিখিতভাবে জানাবো, যাতে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেন। কেননা, সরকারি ব্যবস্থাপনায় চলা ট্রেনের ভাড়া তো হুট করে বাড়ে না, বিমানের ভাড়া কেন বাড়বে। অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটগুলোতে তিন হাজার ৮০০ টাকার ভাড়া ৫ হাজারে পৌছাতে পারে, তাই বলে সাত থেকে ১০ হাজার কেন হবে। এ নিয়ে ঊর্ধ্বতনদের সংশ্লিষ্টদের মাধ্যমে তিনি লিখিতভাবে জানাবেন। তাছাড়া ওসমানী বিমানবন্দরে কোনোভাবে যাতে যাত্রীরা হয়রানির শিকার না হন, সে জন্য সকলের প্রতি কঠোর নির্দেশনা দেন তিনি। এসময় উপস্থিত ছিলেন ওসমানী বিমানবন্দরের সহকারী পরিচালক মো. নজরুল ইসলাম, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের স্টেশন ব্যবস্থাপক আব্দুস সাত্তার, কাস্টমস কর্মকর্তা, আর্মড পুলিশ, ইমিগ্রেশন পুলিশসহ বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তা, গণমাধ্যমকর্মী ও বিমান যাত্রীরা।