ডা. মাহতাব স্বপ্নীল বলেন:বিশ্বে প্রতি ১২ জনে ১ জন হেপাটাইটিস বি ভাইরাসে আক্রান্ত।
বিশ্বে প্রতি ১২ জনের একজন হেপাটাইটিস বি বা সি ভাইরাসে আক্রান্ত বলে জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ইন্টারভেনশনাল হেপাটোলোজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল। মঙ্গলবার (৮ নভেম্বর) দুপুরে হেপাটাইটিস বি নির্মূলে রোটারি ইন্টারন্যাশনাল ডিস্ট্রিক্ট ৩২৮১-এর কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি। তিনি বলেন, হেপাটাইটিস বি বা সি ভাইরাসে আক্রান্ত ১০ শতাংশ মানুষও জানে না যে, তারা এই কঠিন রোগে আক্রান্ত। এর অন্যতম কার, প্রাথমিক পর্যায়ে এসব রোগীদের তেমন কোনো উপসর্গ থাকে না। লিভার অনেকটা ক্ষতিগ্রস্ত না হওয়া পর্যন্ত উপসর্গ বুঝা যায় না। এ জন্যই হেপাটাইটিস বি নির্মূলের এসডিজি গোলটি অর্জন করতে হলে ব্যাপকভাবে স্ক্রিনিং কার্যক্রম বাস্তবায়নের মাধ্যমে রোগী শনাক্ত করা ও জনসচেতনতা তৈরি করতে জোর দিতে হবে। ডা. মাহতাব স্বপ্নীল বলেন, প্রতি বছর দেশের মেডিকেল কলেজগুলোর মেডিসিন ওয়ার্ডে এক-তৃতীয়াংশ রোগী লিভার রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। এ ছাড়া দেশের বিভিন্ন মেডিকেল কলেজের মেডিসিন ওয়ার্ডে প্রতি বছর ১০ থেকে ১২ শতাংশ লিভার রোগে আক্রান্ত রোগীরা ভর্তি হন। তাদের মধ্যে বেশিরভাগই হেপাটাইটিস বি ভাইরাসজনিত লিভার রোগে আক্রান্ত। এই আক্রান্ত হয়ে প্রতি বছর দেশে বহু মানুষের মৃত্যুর পাশাপাশি লিভার রোগের কারণে বিপুল পরিমাণ অর্থও ব্যয় হচ্ছে। তিনি বলেন, পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশও ২০৩০ সালের মধ্যে হেপাটাইটিস বি ভাইরাস নির্মূলের সাসটেইনেবল ডেভলপমেন্ট গোল অর্জনে অঙ্গীকারবদ্ধ। কিন্তু এক্ষেত্রে বড় চ্যালেঞ্জ হলো এ বিষয়ে মানুষকে সচেতন করা। এ ছাড়া দেশে লিভার বিশেষজ্ঞ ও বিশেষায়িত লিভার চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানেরও ঘাটতি রয়েছে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রোটারি ক্লাবের ঢাকা ডিস্ট্রিক্ট গবর্নর ইঞ্জিনিয়ার এম এ ওয়াহাব বলেন, বাংলাদেশকে পোলিওমুক্ত করতে রোটারি ক্লাব ব্যাপক ভূমিকা রেখেছে। এরই ধারাবাহিকতায় হেপাটাইটিস বি নির্মূলেও আমরা কাজ শুরু করেছি। এই উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে রোটারি ইন্টারন্যাশনাল ডিস্ট্রিক্ট ৩২৮১ হেপাটাইটিস বি ভাইরাস নির্মূলে ধারাবাহিকভাবে নানা কর্মসূচির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, হেপাটাইটিস বি নির্মূলে হাজারও সচেতন রোটারিয়ানকে সঙ্গে নিয়ে আপনাদের সবার সহযোগিতায় আমরা এসডিজি গোল ৩ দশমিক ৩ অর্জনে বদ্ধপরিকর। এখন থেকে সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষকে সচেতন করে তোলা এবং হেপাটাইটিস বি ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের সনাক্ত করার জন্য রোটারির উদ্যোগে জেলা পর্যায়ে সচেতনতা ও স্ক্রিনিং কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হবে। অনুষ্ঠানে হেলথ রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি রাশেদ রাব্বি বলেন, হেপাটাইটিস বি প্রতিরোধে সচেতনতা খুবই জরুরি। এক্ষেত্রে বিশেষ করে স্কুলগুলোতে সচেতনতা তৈরি করতে পারলে হেপাটাইটিস বি’র সংক্রমণ অনেকটাই কমে যাবে।