Sobujbangla.com | সরকারও তেমনি সব খেয়েছে, বিএনপির এমপিরা পদত্যাগ করতে প্রস্তুত: মির্জা ফখরুল।
News Head

সরকারও তেমনি সব খেয়েছে, বিএনপির এমপিরা পদত্যাগ করতে প্রস্তুত: মির্জা ফখরুল।

  |  ২৩:১৮, অক্টোবর ২৯, ২০২২

ভোট ও ভাতের আন্দোলন দমন করতে আওয়ামী লীগ আবারও জঙ্গিবাদেরভোতা অস্ত্র বের করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।  রংপুরের গণমাবেশ তিনি প্রশ্ন রাখেন, সরকার যদি জনগণকেভয়ই না পায় তাহলে বিএনপির সব সমাবেশেই বাধা দিচ্ছে কেন? ফখরুল আরও জানান, বিএনপির এমপিরাযে কোনো সময় জাতীয় সংসদ থেকে থেকে পদত্যাগ করতে প্রস্তুত আছে। নিত্যপণ্যের দাম কমানো, সরকারের পদত্যাগএবং নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন আর খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে ধারাবাহিককর্মসূচির অংশ হিসাবে এবার উত্তরবঙ্গের রংপুরে গণসমাবেশের আয়োজন করে বিএনপি।শনিবার ছুটির দিনে শহরের কালেক্টটরেট ঈদগাহ মাঠের এই সমাবেশ বিভাগটির আট জেলার অসংখ্যনেতাকর্মী যোগ দেন। সমাবেশের একদিন আগে থেকে রংপুরের আটটি জেলায় পরিবহনধর্মঘট চলছে। এ কারণে সমাবেশে আসতে নানা ভোগান্তির মুখে পড়তে হয় বিএনপিরনেতাকর্মীদের। সমাবেশ দুপুরে শুরু হলেও শুক্রবার রাত থেকেই সেখানে জড়ো হতে শুরুকরে হাজার হাজার নেতাকর্মী। রাতভর সেখানেই ছিলেন তারা। ভোর থেকে বাড়তে থাকেজনস্রোত। সমাবেশে নিত্যপণ্যের দাম বাড়ার কারণে জনদুভোর্গ, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সংকট, বিএনপি নেতাদের ওপর গুমখুন নির্যাতন, সরকারি নেতাদের দুর্নীতি ও দায়িত্ব পালনেঅবহেলাসহ আরও বিষয়ে বক্তব্য রাখেন দলের নেতারা। এ সময় হাজার হাজার নেতাকর্মীসরকারবিরোধী নানা স্লোগান দেয়। সেই সঙ্গে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিজানান। সমাবেশে প্রধান অতিথির ভাষণে বিএনপি মহাসচিব বলেন, তত্ত্বাবধায়কসরকার ছাড়া হাসিনার অধীনে নির্বাচন হবে না। দল নির্দেশ দিলেই আমাদের এমপিরাপদত্যাগ করবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করতে হবে। তারপর নির্বাচন। প্রয়োজনে জাতীয়সরকার হবে। দেশের অর্থনীতি মেরামতে কাজ করবে নেই সরকার। এ সরকার সব শেষ করে দিয়েছে, তা ঠিক করতে হবে। মির্জা ফখরুল বলেন, হাসিনা বলেছিল ঘরে ঘরে চাকরি দেবে, ২০ লাখ টাকা ঘুষ দিলে চাকরি হয়। ঘুষখোর, ভোট চোর।তাকে আর মানুষ দেখতে চায়না মানুষ। আজ কেন এ সমাবেশ?  এর কারণএকটাই। ১৫ বছর ধরে অত্যাচার চালিয়েছে, সর্বনাশ করেছে।  অর্থনীতি খেয়েছে। এখন বাংলাদেশ খাওয়ারপায়তারা  করেছে। তিনি বলেন, কেমন আছেন বাহে, আমরা রংপুরের সাওয়াল। আমরা ভালো নাই। আমরা সকল নির্যাতন অত্যাচার জয় করেআমরা ভালো থাকব। আজকে সমাবেশে  প্রতিবাদকরতে এসে একজন নিহত হয়েছেন। আমি তাঁর আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি। সরকারকে উদ্দেশ্যে ফখরুল বলেন, আপনারা তো চিতল মাছ খাচ্ছেন। আমরা সাধারণ মানুষ না খেয়ে আছি। আপনারা কিএটা মানবেন?  আমেরিকার একটা রিপোর্টে বলা হয়েছে, এই সরকার মিথ্যা কথা বলে। রংপুরে মানুষ জেগে উঠবে, এইভয়াবহ সরকারের পতন ঘটাবে। আপনাদের নুরুলদিন বলেছিলেন, কোনঠেবাহে জেগে ওঠো। আজকে আমাদের জেগে উঠতে হবে। তিনি আরও বলেন, সবকিছু খেয়ে ফেলেছেএই বাকশালী সরকার। ছোটবেলায় মুনতাসীর মামুনের নাটক ‘মুনতাসির ফ্যান্টাসি’দেখেছিলাম। সেখানে মূল চরিত্রে যে ছিল সে শুধুই খায়। সব খাবার শেষে কাগজ খেয়েছে।দলিল-দস্তাবেজ খেয়েছে। এমনকি টেবিল চেয়ারও খেয়েছে। এই সরকারও তেমনি সব খেয়েছে। তিনি বলেন, এই সরকারকে আরক্ষমতায় রাখা যায়?  এখন বলে কিনা দেশে দুর্ভিক্ষ হবে। এ দায়কার?  ১৯৭৫ সালে তার বাবার আমলেও দেশে দুর্ভিক্ষ হয়েছিল। এইরংপুরের বাসন্তি লজ্জা নিবারণের জন্য এক টুকরো কাপড় পায়নি। মানুষ খাবার খেতে নাপেরে রাস্তায় পড়েছিলো। এখন আবার সেই অবস্থা ফিরে এসেছে। মির্জা ফখরুল অভিযোগ করে বলেন, ১০ টাকা কেজির চালখাওয়াতে চেয়ে এখন আওয়ামী লীগ সরকার বর্তমানে ৯০ টাকার চাল খাওয়াচ্ছে। বাজারে চিনিরদামও বেড়েছে। শাকসবজিও মানুষ কিনতে হিমশিম খাচ্ছে। এটা দুর্ভিক্ষের লক্ষণ। দেশেদুর্ভিক্ষ হলে এর দায় শেখ হাসিনা ও তার সরকারকেই নিতে হবে। বিএনপি মহাসচিব বলেন, সরকার নাকি বিরোধীদল ও জনগণকেভয় পায় না। ভয় যদি না পাও তাহলে কেন দুই দিন ধরে পরিবহণ বন্ধ করে দাও। কেন আমাদেরনেতাদের গুলি করে মার? সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরুমাহমুদ চৌধুরী বলেন, দেশে দুর্ভিক্ষ নেমে আসার আগেইপ্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করা হবে। সাধারণত বিরোধী দল হরতাল ডাকলেওএখন সরকার ডাকছে। তাই বুঝতেই পারছেন সরকারের কী অবস্থা। সরকার জনগণ থেকে বিচ্ছিন্নহয়ে পড়েছে। দল আন্দোলনের ডাক দিলেও রংপুর বিভাগের জনগণ সমাবেশে ব্যাপক উপস্থিতিরমধ্য দিয়ে বিপ্লব করেছে। দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ বলেন, সমাবেশকে কেন্দ্র করে বিএনপির নেতা-কর্মীরা উজ্জীবিত। এটা সরকারকেক্ষমতাচ্যুত করার ইঙ্গিত ছাড়া আর কিছুই নয়। দলের সদস্যদের সংগ্রাম বৃথা যাবে না।শেখ হাসিনাকে অবশ্যই যেতে হবে এবং যাবেন। এবারের আন্দোলন শুধু জয়ের জন্য। জয় ছাড়াআমরা ঘরে ফিরব না। দলের ভাইস চেয়ারম্যান ও এই সমাবেশের সমন্বয়ক এ জেডএম জাহিদ হোসেন বলেন, রংপুরের মানুষ দেখিয়েছে, যত বাধা তত বড় গণজমায়েত। রংপুর মিছিলের শহরে পরিণত হয়েছে। গণরোষ থেকেবাঁচতে শান্তিপূর্ণভাবে সরকারের ক্ষমতা ছেড়ে দেওয়া উচিত। রংপুর মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সামসুজ্জামা সামুরসভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন- সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল খালেক, স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি এস এম জিলানী, কৃষকদলের মহাসচিব শহিদুল ইসলাম (বাবুল), ছাত্রদলের কেন্দ্রীয়সভাপতি কাজী রওনোকুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক সাইফ মোহাম্মদজুয়েল প্রমুখ।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ