Sobujbangla.com | শুরু হচ্ছে ডিজিটাল পদ্ধতিতে মাঠ জরিপ অঞ্চলে সিলেট
News Head

শুরু হচ্ছে ডিজিটাল পদ্ধতিতে মাঠ জরিপ অঞ্চলে সিলেট

  |  ২২:৫২, অক্টোবর ২৯, ২০২২

দুইশত বছরের পুরনো জরিপ কার্যক্রমকে বাদ দিয়ে এবার জমির মালিকদের ভোগান্তি দূর করতে সিলেট অঞ্চলে ডিজিটাল পদ্ধতিতে মাঠ জরিপের কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। আগামী মাস থেকে কানাইঘাট, জুড়ী, শাল্লা, দোয়ারাবাজার ও ছাতক উপজেলার ২৬টি মৌজায় শুরু হবে এই জরিপ কার্যক্রম। এ জন্যে ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও সার্ভেয়ারগণকে প্রশিক্ষণও দিয়েছে। ডিজিটাল পদ্ধতিতে জরিপ কার্যক্রম সম্পন্নের পর এটি সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। ইন্টারনেটের মাধ্যমে যে কেউ তার জমির ম্যাপ ও পর্চা মোবাইলে দেখতে পারবেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। সিলেটের জোনাল সেটেলমেন্ট অফিসার (উপসচিব) মুহাম্মদ ওবায়দুর রহমান জানান, নতুন করে ২৬টি মৌজার জরিপ কার্যক্রম ডিজিটাল পদ্ধতিতে শুরু হবে। এ সকল মৌজার জরিপ ইতোপূর্বে করা হয়নি। এই পদ্ধতিতে জরিপ কার্যক্রম সম্পন্ন হলে জমির মালিকদের ভোগান্তির অবসান ঘটবে। সেটেলমেন্ট অফিসে না এসে জমির মালিকগণ তাদের স্মার্ট ফোনেই জমির মৌজা ম্যাপ ও পর্চা দেখতে পারবেন। এটি সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। যে কোনো সময় মৌজার ম্যাপ ও পর্চা দেখা যাবে। ডিজিটাল জরিপের অংশ হিসেবে প্রথম ধাপে প্রশিক্ষিত সার্ভেয়াররা মৌজার স্থায়ী পিলার স্থাপন করবেন। প্রাথমিকভাবে ২৬ মৌজা হলেও পরবর্তীতে সকল মৌজার জরিপ কার্যক্রম ডিজিটাল পদ্ধতির আওতায় নিয়ে আসা হবে। ডিজিটাল পদ্ধতিতে জরিপের ফলে জমির মালিকানার বিষয়টি একেবারে পরিষ্কার হয়ে যাবে। এর ফলে ফৌজদারি ও দেওয়ানি আদালতে মামলার সংখ্যাও কমে আসবে। জানা গেছে, সিলেট জেলার কানাইঘাট উপজেলার জে এল নং-৪৭ হাদারকান্দি মৌজা, মৌলভীবাজার জেলার জুড়ী উপজেলার জেএলনং-১৬/পাথারিয়া হিলস রিজার্ভ ফরেস্ট মৌজা, সুনামগঞ্জ জেলার শাল্লা উপজেলার জেএলনং-১০৩ /ঘুঙ্গিয়ারগাঁও মৌজা ও জেএলনং-১০৪/ ডুমরা মৌজার জরিপ কার্যক্রম ডিজিটাল পদ্ধতিতে শুরু হবে। ছাতক উপজেলার জেএলনং- ২২৪ /বড়গুপি মৌজা, জেএলনং- ২২৮/ খাগাউড়া মৌজা, জেএলনং- ২৩২/ লক্ষ্মীপাশা মৌজা, জেএলনং- ২৩৩/ জটি মৌজা, জেএলনং- ২৩৬/ কুর্শী মৌজা, জেএলনং- ২৩৮/ মৈনপুর মৌজা, জেএলনং- ২৩৯/ দক্ষিণ রুস্তমপুর মৌজা, জেএলনং- ২৭৯/ জাহিরপুর মৌজা, জেএলনং- ২৮১/ মন্ডলপুর মৌজা, জেএলনং-২৮৩/ ইসহাকপুর বাদেচক মৌজা, জেএলনং-২৮৬/ ঝিকলিয়া মৌজা, জেএলনং- ২৮৭/ বিশারদপুর মৌজা, জে এল নং- ২৯০/ শ্রীকরপুর মৌজা, জেএলনং- ২৯১/ সমাসপুর মৌজা, জেএলনং- ২৯২/ বরাটিকা মৌজা, জেএলনং- ২৯৫/কুর্শি দক্ষিণ মৌজা, জেএলনং- ২৯৬/উত্তর কুর্শি মৌজা, জেএলনং- ২৯৮/রোকনটাজ মৌজা, জেএলনং- ৩০০/সিঙ্গারকাচ মৌজা, জেএলনং- ৩০১/ জাহিদপুর মৌজা ও জেএলনং- ৩০৫/বুরাইয়া মৌজার জরিপ কার্যক্রম ডিজিটাল পদ্ধতিতে শুরু হবে বলে সূত্রে জানা গেছে। সিলেট অঞ্চলের এই ২৬ মৌজাসহ দেশের ৩৮ জেলার ১৮০ টি মৌজার জরিপ কার্যক্রম ডিজিটাল পদ্ধতিতে সম্পন্ন করা হবে। এসকল মৌজায় স্বাধীন বাংলাদেশে এবারই প্রথমবারের মতো জরিপ কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা জানান, ডিজিটাল পদ্ধতিতে জরিপ কার্যক্রমে মানুষের হাতের স্পর্শ ছাড়াই তৈরি করা হবে মৌজার ম্যাপ। এই জরিপ কার্যক্রমে ব্যবহার করা হবে ড্রোন। ড্রোনের মাধ্যমে তোলা ছবি এবং অন্যান্য ফোর্থ জেনারেশন প্রযুক্তি ব্যবহার করে চূড়ান্ত হবে জমির অন্যান্য ইন্ডিকেটর। ম্যাপে জমির পরিমাণ, আইলের দৈর্ঘ্য-প্রস্থ, আকার সম্পর্কেও জানা যাবে। এই জরিপে তৈরি ম্যাপটিতে সেন্টিমিটার পর্যায়ে ভূমি পরিমাপের নির্ভুলতা থাকবে। পরিমাপের ক্ষেত্রে ইমেজ থেকে সুবিধামতো রেফারেন্স-এর কো-অর্ডিনেটের মান ও মৌজা ম্যাপের যেকোনও প্লটের দূরত্বের মাপ ও প্লটের খতিয়ান. নির্ধারিত দৈর্ঘ্য-প্রস্থ মাপ ও চার কোনার চারটি কো-অর্ডিনেট মান নিয়ে কনভেনশনাল ও আধুনিক ডিজিটাল পদ্ধতিতে যেকোনও প্লটের পরিমাপ, ল্যান্ড ডিমার্কেশন, ল্যান্ড ডিভাইডেড করা সম্ভব হবে। এতে বাড়তি করে দরকার হবে না আলাদাভাবে স্থাপিত কোনও রেফারেন্স জিওডেটিক পিলার তথা জরিপের জন্য পিলার স্থাপনের। প্রচলিত ভূমি জরিপে যেখানে ২০-২৫ বছর লাগে, সেখানে খুব অল্প সময়ে ডিজিটাল জরিপ করা সম্ভব হবে। এই জরিপ শুরুর সঙ্গে সঙ্গে খসড়া ম্যাপ তৈরি করে ওয়েবসাইটে দেওয়া হবে। যাতে জমির মালিক বিশ্বের যেকোনও স্থান থেকে তার জমির ম্যাপ দেখে জমির পরিমাণ কমবেশি হলে তাৎক্ষণিক আপত্তি দাখিল করতে পারেন। এছাড়া কোনও এলাকায় প্রাকৃতিক কারণে বড় ধরনের ভূমির বিচ্যুতি না ঘটলে রিভিশন্যাল সার্ভের প্রয়োজনীয়তাও থাকবে না ডিজিটাল ম্যাপ পার্টিশনের সুবিধার জন্য। এই জরিপের ফলে মৌজা ম্যাপ ‘ভূমি ব্যবস্থাপনা অটোমেশন’ প্রকল্পে সরবরাহ করা হবে। জমি বিক্রির পর নামজারি খতিয়ান পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে ম্যাপের সীমানাও বদলে যাবে। উল্রেখ্য, চলতি বছরের ৩ আগস্ট পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সংলগ্ন মাঠে ডিজিটাল পদ্ধতিতে জরিপ কার্যক্রম উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে দেশে এর কার্যক্রম শুরু হয়। ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী পটুয়াখালীতে এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ