Sobujbangla.com | শেখ হাসিনা মেডিক্যাল কলেজ কবে নিজস্ব ভবন পাবে হবিগঞ্জ।
News Head
 আবারও সহযোগিতা করল যুক্তরাষ্ট্র, রোহিঙ্গাদের জন্য ২ হাজার কোটি টাকার অজিত সহায়তা দেবে যুক্তরাষ্ট্র। আওয়ামী লীগের, সাবেক এমপি আউয়াল গ্রেপ্তার। পুলিশের ওপেন হাউজডে-মতবিনিময় সভা দোয়ারাবাজারে । সাংবাদিক তুরাব হত্যা মামলার আসামি ওসি মঈনকে ছেড়ে দেয়ায় সিলেট ক্ষোভ। ৮ দফা দাবিতে সিলেটে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান। গ্রেফতার ২ ধর্ষণ স্কুলছাত্রী অভিযোগে কমলগঞ্জে। উনিশ উপজেলার নির্বাচন স্থগিত। ঘূর্ণিঝড় রেমালে ক্ষতিগ্রস্ত সাড়ে ৩৭ লাখ মানুষ, বিধ্বস্ত ৩৫ হাজার ঘরবাড়ি’। এগারো উপজেলার চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানরা শপথ নিলেন। সিলেটে ওসমানী বিমানবন্দরে আটকা পড়েছে ৬টি ফ্লাইট।

শেখ হাসিনা মেডিক্যাল কলেজ কবে নিজস্ব ভবন পাবে হবিগঞ্জ।

  |  ২১:৫৮, অক্টোবর ২৯, ২০২২

একাডেমিক কার্যক্রম শুরুর দীর্ঘ পাঁচ বছরেও নিজস্ব ভবন পায়নি হবিগঞ্জ শেখ হাসিনা মেডিক্যাল কলেজ। ২৫০ শয্যা জেলা সদর হাসপাতালের দুটি ফ্লোরে চলছে এটির একাডেমিক কার্যক্রম। ক্লাসরুম, লাইব্রেরি ও শিক্ষক-কর্মচারী সংকটে ব্যাহত হচ্ছে পাঠদান। ল্যাব, সরঞ্জাম ও টেকনিশিয়ান সংকটে ব্যাবহারিক ক্লাস করতে পারছেন না শিক্ষার্থীরা। সেই সঙ্গে শিক্ষার্থীদের আবাসন সংকট তো আছেই।২০১৫ সালের ১২ জানুয়ারি শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য প্রশাসনিক অনুমোদন পায় হবিগঞ্জ শেখ হাসিনা মেডিক্যাল কলেজ। কিন্তু একাডেমিক ভবন নির্ধারণ না হওয়ায় প্রশাসনিক অনুমোদন পাওয়ার পরও ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষে শিক্ষার্থী ভর্তির উদ্যোগ নেয়া হয়নি। পরে অস্থায়ী ক্যাম্পাস হিসেবে ২৫০ শয্যা জেলা সদর হাসপাতালের নতুন ভবনের দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলা নির্ধারণ হলে ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে ৫১ জন শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়। এরপর থেকে সেখানেই চলছে মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম।বর্তমানে এখানে ৫টি শিক্ষাবর্ষের ২৫২ জন শিক্ষার্থী ভর্তি রয়েছেন। ২৫০ শয্যা জেলা সদর হাসপাতালের দুটি ফ্লোরের মাত্র ৫টি কক্ষে চলছে তাদের পাঠদান। সীমিতসংখ্যক ক্লাসরুমে পাঁচটি ব্যাচের শিক্ষার্থীদের পাঠদান চলছে। নিয়ম অনুযায়ী একটি মেডিক্যাল কলেজের পাশে ৫০০ শয্যার হাসপাতাল থাকা বাধ্যতামূলক। হবিগঞ্জ আধুনিক জেলা সদর হাসপাতাল কাগজে-কলমে ২৫০ শয্যা হলেও বাস্তবে এটি চলছে এখনও ১০০ শয্যার জনবলে। শেখ হাসিনা মেডিক্যাল কলেজে ৭৬ জন শিক্ষকের অনুমোদন থাকলেও কর্মরত আছেন মাত্র ৩৬ জন। বাকি ৪০টি শিক্ষকের পদ শূন্য। চক্ষু-নাক-কান-গলা সার্জারি, চর্ম ও যৌন মেডিসিন, নিওরো মেডিসিনসহ গুরুত্বপূর্ণ বিভাগে নেই একজন শিক্ষকও। কলেজে কমপক্ষে ছয়জন রেজিস্ট্রার ও সিএন বা সহকারী রেজিস্ট্রার থাকার কথা থাকলেও নেই একজনও। ২০ জন তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী পদের অনুমোদন থাকলেও সব পদই শূন্য। অস্থায়ীভাবে সেখানে মাত্র সাতজন কর্মচারী দায়িত্ব পালন করছেন। মেডিক্যাল কলেজে তিনটি ল্যাব থাকার কথা থাকলেও আছে মাত্র একটি। সেখানেও নেই টেকনিশিয়ান ও ব্যাবহারিক ক্লাস করার মতো পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা ও যন্ত্রপাতি। একটিমাত্র লাইব্রেরি থাকলেও সেখানে নেই পর্যাপ্ত আসন ও প্রয়োজনীয় বই। একটি ব্যাচ লাইব্রেরির ভেতরে থাকলে অপর ব্যাচকে বাইরে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। আবার জনবল না থাকায় কলেজ ছুটির পর বন্ধ থাকে লাইব্রেরি। এদিকে স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণ, ক্লাসরুম বৃদ্ধি, শিক্ষক-কর্মচারী সংকট নিরসন ও আবাসনব্যবস্থা নিশ্চিত করাসহ ১২ দফা দাবিতে গত ২২ ও ২৩ অক্টোবর ক্লাস বর্জন করে আন্দোলনে নামেন শেখ হাসিনা মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষার্থীরা। সংকট সমাধানে কলেজ অধ্যক্ষের আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে ২৪ অক্টোবর থেকে তারা ক্লাসে ফেরেন। কলেজের দ্বিতীয় ব্যাচের শিক্ষার্থী তাহমিনা ইসলাম আনিকা বলেন,প্রতিটা প্রতিষ্ঠানের একটা ভিত্তি দরকার। এখানে কিন্তু সেই ভিত্তিটাই নেই। আমাদের তো নিজস্ব ভবন নেই, যে ভবনে এখন ক্লাস করছি সেখানেও পর্যাপ্ত ক্লাসরুম নেই। এভাবে একটি মেডিক্যাল কলেজ চলতে পারে না। পঞ্চম বর্ষের শিক্ষার্থী প্রশান্ত রায় বলেন,পঞ্চম বর্ষে আমাদের কিছুদিন পর ইন্টার্নি শুরু হবে। কিন্তু এখানে ইন্টার্নির কোনো ব্যবস্থা করা হচ্ছে না। এখানে রেজিস্ট্রার বা সিএ রেজিস্ট্রার নেই। আমরা শুধু বই পড়ে ডাক্তার হতে পারব না। বই পড়ে যদি ডাক্তার হওয়া যেত,তাহলে নীলক্ষেত থেকে বই কিনে বাড়িতে বসেই ডাক্তার হতে পারতাম। রেজিস্ট্রার বা সিএ রেজিস্ট্রার না থাকায় আমরা প্র্যাকটিস করতে পারছি না। তাহলে আমরা শিখব কীভাবে?’ চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মনিসা পাল বলেন,কলেজের যেমন সমস্যার অন্তত নেই, তেমনি আমাদের আবাসন সংকটও চরম। যে রুমে ছয়জন থাকার কথা, সেই রুমে থাকতে হচ্ছে ১৬ জনকে। ছোট একটি রান্নাঘরে দেড় শ মানুষের রান্না করতে হয়। যে কারণে প্রায় দিন ঠিক সময় রান্না না হওয়ায় না খেয়েই আমাদের ক্লাসে আসতে হয়।’ হবিগঞ্জ শেখ হাসিনা মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. সুনির্মল রায় বলেন,আপাতত আরও একটি ক্লাসরুম বৃদ্ধির জন্য কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে। এ ছাড়া আমরা বর্তমানে সদর হাসপাতালের যে ভবনে আছি, সেটি ছয়তলা। শুনেছি এই ভবনে ১০ তলা ফাউন্ডেশন দেয়া আছে। সে ক্ষেত্রে আমরা কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করব, আরও একটি ফ্লোর বাড়িয়ে দেয়া যায় কি না।’ তিনি বলেন,শিক্ষক ও কর্মচারী সংকট আছে, এটি সত্য। এ ছাড়া এখানে রেজিস্ট্রার বা সিএ রেজিস্ট্রার নেই। এই পদটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ রেজিস্ট্রার ছাড়া তারা প্রাক্টিস করতে পারবে না। এ ব্যাপারে আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ