ফখরুল বলেছেন, এক্সিট করেন,ক্ষমতা ছেড়ে চলে যান নাহলে পালিয়ে যাওয়ার সময় পাবেন না।
পদত্যাগ করে সরকারকে নিরাপদে বিদায় নেয়ার আহবান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তা না হলে জনগণকে সাথে নিয়ে নব্বইয়ের মতো গণঅভ্যুত্থানে সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করা হবে। সোমবার এক স্মরণসভায় তিনি এসব কথা বলেন। একই সভায় দলটির আরেক নেতা আমান উল্লাহ আমান এবার দাবি করেছেন, সরকারবিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দিতে শিগগিরই মাঠে নামবেন বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। আর বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, নির্বাচনে খালেদা জিয়াকে অংশ নিতে না দেয়া হলে বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচন হতে দেয়া হবে না। ১৯৯০ সালের ১০ অক্টোবর স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী গণআন্দোলনে রাজধানীর পল্টনে পুলিশের গুলিতে শহীদ হন নাজির উদ্দিন জেহাদ। সেই থেকে দিনটি জেহাদ দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। সকালে দৈনিক বাংলা মোড়ে তার স্মৃতি স্তম্ভে শ্রদ্ধা জানান বিএনপি ও ছাত্রদল নেতারা। পরে ঢাকা রিপোর্টাস ইউনটিতে তাঁর স্মরণসভায় যোগ দেন বিএনপি নেতা ও নব্বুইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের ছাত্রদল নেতারা। তারা বলেন, স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের মতোই এই সরকারকেও পদত্যাগে বাধ্য করতে হবে। সে জন্য রাজপথে নামতে হবে। ঢাকা উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান বলেন, বিএনপির চেয়াপারসন খালেদা জিয়াকে শিগগিরই আমাদের মাঝে পাবো। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকেও ইনশাল্লাহ, শিগগিরই আমাদের মাঝে এই বাংলাদেশে পাবো। ৯০ এর স্মৃতিচারণ করে আমান বলেন, শহীদের রক্তে রঞ্জিত কোনও সরকার আজ পর্যন্ত টিকে থাকেনি। তাই এই সরকারের আর ক্ষমতায় থাকার কোনও নৈতিকতা নেই। এখন আয়না ঘর গুঁড়িয়ে দিয়ে গণভবন উদ্ধার করা সময়ের ব্যাপারমাত্র। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র যদি না থাকে তাহলে মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মা কষ্ট পাবে। সেজন্যে শেষ যুদ্ধটা করতে চাই। আমরা পড়ন্ত বেলায় চলে এসেছি। শেষ জীবনের শেষ যুদ্ধটা করতে চাই। দেশে গণতন্ত ও স্বাধীনতা ফেরানোর জন্য। সভায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেন, তাঁর দলের নেতা আমানুল্লাহ আমানের এক ধমকেই নিন্দুকদের মাথা খারাপ হয়ে গেছে। তিনি আরও বলেন, ভয়ের কোনও কারণ নাই। আমরা দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে চাই। তিনি বলেন, কিছুদিন আগেও আমাদের যারা ক্রিটিকস, যারা নিন্দুক, তারা বলেছে আরে বিএনপি নাই। বিএনপি ফিল্ডেই নাই। রাস্তায় বিএনপি নাই। হাটুভাঙ্গা এসব অনেক কথাই বলেছে। এখন কী বলছে? এখন বলছে, বাবা তোমরা আর ধমক দিও না। ফখরুল বলেন, আমান উল্লাহ আমান একটা ধমক দিয়েছে, ওদের মাথা খারাপ হয়ে গিয়েছে। এখন টেলিভিশনের ওদের যত লোক আছে তারা ওইটা নিয়ে লেগে পড়েছে। তিনি বলেন, ভয়ের কোনও কারণ নাই। আমরা দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে চাই। দেশে গণতন্ত্র ফেরাতে চাই। আমরা মানুষের অধিকারকে ফিরিয়ে আনতে চাই। এর জন্য আমাদের সাত জন প্রাণ দিয়েছে। আমরা হাজারও প্রাণ দেবো৷ গণতন্ত্রকে অবশ্যই আমরা ফিরিয়ে আনবো। সরকারকে নিরাপদে চলে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আপনাদের এখনও সময় আছে, বোধ উদয় করেন। সেফ এক্সিট করেন। চলে যান। ক্ষমতা ছাড়েন। নিরেপক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা দেন। সংসদ বিলুপ্ত করেন৷ মির্জা ফখরুল আরও বলেন, আমাদের মানুষের ওপর, জনগণের ওপর আস্থা আছে। আমরা বিশ্বাস করি এদেশের মানুষ কোনও অন্যায়কে মেনে নেয়নি। কোনোদিন গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে তারা কাউকে দাঁড়াতে দেয়নি। আজ থেকে নয়, দীর্ঘকাল থেকে। সেদেশের মানুষ জেগে উঠেছে। শহীদ জেহাদ স্মৃতি পরিষদ আয়োজিত সভায় আমান ও দুদু ছাড়াও নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী ছাত্র গণঅভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দেয়া সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্যের নেতারা বক্তব্য রাখেন।