বলেন ভোক্তা অধিকার, প্রতারণার ছক সাজিয়ে রেখেছে সুপার শপগুলো।
দেশের সুপার শপগুলোতে বেশি মুনাফা করার জন্য প্রতারণার ছক সাজিয়ে রেখেছে বলে জানিয়েছেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান। মঙ্গলবার (৬ সেপ্টেম্বর) কারওয়ান বাজারে সুপার শপগুলোর ব্যবস্থাপকদের সঙ্গে বৈঠক শেষে এ কথা বলেন তিনি। মহাপরিচালক বলেন, বিভিন্ন ধরনের ‘অনিয়ম’ চিহ্নিত করা হয়েছে। এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে স্বপ্ন, মিনাবাজার, আগোরা, প্রিন্সবাজার, ইউনিমার্টসহ ঢাকার বিভিন্ন সুপার শপের বিপণন কেন্দ্র পরিদর্শন করেন ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। এ সময় অতি মুনাফা, অন্যায্য ঘোষণাসহ ভোক্তা স্বার্থবিরোধী বিভিন্ন অনিয়ম চিহ্নিত করা হয়। বৈঠকে চাল, চিনি, লবণ, ডিম, ইলিশ মাছসহ বিভিন্ন পণ্যে অতিমুনাফার তথ্য তুলে ধরেন কর্মকর্তারা। তারা জানান, সুপার শপগুলোতে ডিমে ১৮ থেকে ২২ শতাংশ, চালে ১৩ থেকে ২৯ শতাংশ, লবণে ২৮ শতাংশ পর্যন্ত মুনাফা করতে দেখা গেছে। অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সফিকুজ্জামান বলেন, “কয়েকদিন আগে ডিমে কারসাজি ও অতিমুনাফার আড়ালে ভোক্তার পকেট থেকে প্রায় ৫০০ কোটি টাকা চলে গিয়েছিল। “সুপার শপগুলোতে যে এমআরপি (সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য) লেখা হয়, সেখানে লাভের পরিমাণ অনেক বেশি। তারাও সেটা শিকার করেছেন। কে এর জন্য দায়ী সেজন্য আমরা এখনই সিদ্ধান্ত নিচ্ছি না।” সুপার শপ মালিক আর পণ সরবরাহকারীরা পরস্পরকে দুষছেন জানিয়ে তিনি বলেন, “সাপ্লাইয়াররা সুপার শপ মালিকদের দিকে আঙ্গুল তুলেছিল। এখন এরা বলছেন যে, সাপ্লাইয়াররা দাম লিখে দেয়। “আমিও জানতাম যে, আপনারা (সুপার শপ মালিক) আজকে এসে এসবই বলবেন। বিষয়টি পরিষ্কার হওয়া দরকার। কারণ এখানে ভোক্তার স্বার্থ জড়িত। ভোক্তার পকেট থেকে অতিরিক্ত টাকা চলে যাচ্ছে।” সফিকুজ্জামান বলেন, “প্রিমিয়াম চালের নামে প্রতি কেজি চাল ৮২ টাকা করে বিক্রি করছে তারা। এসব চাল বাজারে ৫৪ থেকে ৫৮ টাকায়ও বিক্রি হয়। “আমাদের কাছে তথ্য আছে, মিনিকেট নামে যেসব চাল, সেগুলো মোটা চাল ছাঁটাই করে তৈরি করা।” তিনি বলেন, “ভোক্তা যখন বাজারে যায়, সে প্রতিটি পদক্ষেপে প্রতারিত হচ্ছে। প্রতারণার ছক তারা যেভাবে সাজিয়ে রেখেছে, সেই জায়গাগুলোতে আমাদের কাজ করতে হবে।” এসব নিয়ে আগামী সপ্তাহে পণ্যের উৎপাদক, ভেন্ডর ও সরবরাহকারীদের নিয়ে ত্রিপক্ষীয় বৈঠক করার কথা জানান জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক। এ ছাড়াও বৈঠকে সুপার শপের পাশাপাশি মধ্যস্বত্বভোগীর প্রসঙ্গ তুলে ধরেন ভোক্তার অধিকার রক্ষায় নাগরিক সংগঠন কনজ্যুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) অনলাইন প্রকাশনা ভোক্তাকণ্ঠের সম্পাদক কাজী আব্দুল হান্নান।