এক বছরে দেশে ঘুষের পরিমাণ ১০ হাজার ৮৩০ কোটি টাকা (ভিডিও)।
সেবা খাতে দুর্নীতি ওপেন সিক্রেট হলেও এতে লাগাম টানা যাচ্ছে না। এ বিষয়ে দুই-তিন বছর পরপর এ পর্যন্ত ৯টি জাতীয় খানা জরিপ গবেষণার ফল প্রকাশ করেছে ট্রান্সপ্যারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ-টিআইবি। বুধবার (৩১ আগস্ট) রাজধানীর ধানমন্ডিতে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে গবেষক ফারহানা রহমান জরিপের তথ্য তুলে ধরেন। এই দফায় ১৭টি সেবাখাতে দুর্নীতি ও হয়রানি নিয়ে গত বছরের ১৩ ডিসেম্বর থেকে চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত সারা দেশে খানা জরিপের তথ্য সংগ্রহ করেছে সংস্থাটি। এতে দেখা যায়, বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সেবা নিতে দুর্নীতির শিকার হয়েছে প্রায় ৭১ শতাংশ খানা। প্রতিটি পরিবার গড়ে ঘুষ দিয়েছে প্রায় সাড়ে ৬ হাজার টাকা। সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত খাত আইনশৃঙ্খলা সংস্থা। তাদের দুর্নীতির শিকার ৭৪ দশমিক ৪ শতাংশ খানা। তালিকায় পরের খাতগুলো হলো পাসপোর্ট অধিদপ্তর, বিআরটিএ, বিচারিক সেবা, স্বাস্থ্য ও স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান এবং ভূমিসেবা। টিআইবি জরিপে অংশগ্রহণকারী ৭২ শতাংশ মনে করেন ঘুষ না দিলে সেবা পাওয়া যায় না। ২০২০ সালের ডিসেম্বর থেকে গত বছরের নভেম্বর পর্যন্ত এক বছরে ঘুষের পরিমাণ ছিল ১০ হাজার ৮৩০ কোটি টাকা। ২০১৭ সালের তুলনায় ২০২১ সালে দুর্নীতি বেড়েছে, স্থানীয় সরকার, বিমা, ব্যাংক, এনজিওতে। তবে কমেছে শিক্ষা, বিদ্যুৎ, কৃষি ও গ্যাস খাতে। টিআইবির পরিচালিত জরিপের সময়ে শহরের চেয়ে বেশি ঘুষের শিকার হয়েছেন গ্রামের মানুষ। কিন্তু দুর্নীতির অভিযোগ করা হলেও ৭২ শতাংশ ক্ষেত্রে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। এ সময় টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, সেবা খাতে দুর্নীতিতে কিছুক্ষেত্রে ইতিবাচক পরিবর্তন এলেও সার্বিক তথ্য উদ্বেগজনক। বিচারিক খাতের দুর্নীতিও উদ্বেগজনক। যারা অনিয়ম করছেন, তারা ঘুষকে প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ করেছেন। যারা দিচ্ছেন তারা জীবনযাপনের অংশ করে নিয়েছেন।