২০ দলীয় জোট থাকছে না, বিএনপি-জামায়াতের আন্দোলন হবে ‘যুগপৎ’।
বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট আর থাকছে না। তবে যুগপৎ আন্দোলন করার বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলগুলো। বেশ কয়েকটি শরীক দলের নেতারা এই তথ্য জানিয়েছেন। নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের দাবিতে বিগত দুটি সংসদ নির্বাচনেই বিএনপি আন্দোলন করেছে ২০ দলীয় জোট ও ঐক্যফ্রন্ট। দাবি পূরণ না হওয়ায় ২০১৪ সালে দলটি কঠোর কর্মসূচি দিয়ে নির্বাচন বর্জন করে। আর ২০১৮ সালে শক্ত কোনো কর্মসূচির বদলে আলোচনার টেবিলে ছিল বিএনপি। নির্বাচনে অংশ নিয়ে নিদারুণ মন্দ ফলাফলের মুখোমুখি হয় তারা। ২০২৩ সালের শেষ দিকে অথবা ২০২৪ এর শুরুতে হতে পারে দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন। সেই নির্বাচন ঘিরে বিএনপিসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো তৎপরতা চালিয়ে আসছে। সরকারবিরোধী বৃহত্তর একটি আন্দোলন গড়ে তোলার পরিকল্পনা করছে বিরোধী শিবির। লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) মহাসচিব ড. রেদোয়ান আহমেদ বলেছেন, ‘বিশ দলীয় জোট এখন আর নেই।’ বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ইতোমধ্যে জোটের অনেক রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন। জোটের মাধ্যমে নয়, যার যার মতো আন্দোলনে অংশগ্রহণ করবেন। যার প্রেক্ষিতে বিএনপি নিজস্ব উদ্যোগেই বেশ কয়েকটি বড় কর্মসূচি পালন করছে। যার সঙ্গে জোটের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। ফাঁস হওয়া ভিডিওতে জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমানও একই কথা বলেছেন, ‘এই জোটের সঙ্গে বিভিন্ন দল যারা আছেন, বিশেষ করে প্রধান দলের (বিএনপি) এই জোটকে কার্যকর করার কোনো চিন্তা নাই। বিষয়টা আমাদের কাছে স্পষ্ট দিবালোকের মতো এবং তারা আমাদের সঙ্গে বসে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এখন বাস্তবতা হচ্ছে নিজস্ব অবস্থান থেকে আল্লাহর উপর ভর করে পথ চলা। তবে হ্যাঁ জাতীয় স্বার্থে একই দাবিতে যুগপৎ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করবো।’ সিলেটের শুরা সদস্য নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘আসলে জোটের এখন কোনো কার্যক্রম নাই। দীর্ঘদিন ধরে বিএনপির সঙ্গে আমাদের জেটগত যোগাযোগও নাই। আমরা ১৯৯৬ সালের মত লিয়াজোঁ কমিটির মাধ্যমে সামনে যুগপৎ আন্দোলন করবো। যার যার অবস্থান থেকে কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।’ জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের বলেন, ‘জোট ছাড়ার আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে এখন আমরা আলাদা কর্মসূচি দচ্ছি। তার মাধ্যমে যুগপৎ আন্দোলন করছি আলাদা প্লাটফর্মে।’ বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল মাহমুদ টুকু বলেন, ‘জামায়াতের আমির সব বলেছেন। আমরা জোটের ব্যানারে কোনো কর্মসূচি পালন করছি না। আমরা নিজেদের মতো করে কর্মসূচি পালন করছি এবং সবাই তা করবে।’ জোটের সমন্বয়ক ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘এই মুহূর্তে আমাদের প্রধান লক্ষ্য সব বিরোধী শক্তির মধ্যে বৃহত্তর ঐক্যের দিকে, যারা একযোগে আন্দোলন করবে। লক্ষ্য হবে সরকারকে উৎখাত করা এবং একটি নির্দলীয় অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করা।’ জামায়াতের আমিরও বলেছিলেন, তারা জাতীয় স্বার্থে যুগপৎ আন্দোলন করার পক্ষে। গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘আমার পর্যবেক্ষণ হলো, বিএনপির একা চলার নীতি এবং জামায়াতের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করা হবে বাম দলগুলোর জন্য স্বস্তিদায়ক।