কবে খেলবেন বলেন, আমরাও খেলতে চাই আসুন নারায়ণগঞ্জে, শামীম ওসমান।
বিএনপির প্রতি আবারও চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিলেন সংসদ সদস্য এ কে এম শামীম ওসমান। দলটির প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেছেন, আপনারা সুযোগ নিতে চান, খেলতে চান। আপনারা খেলবেন আমাদের সাথে, কবে খেলবেন বলেন। আমরাও খেলতে চাই। শনিবার বিকেল তিনটায় নারায়ণগঞ্জের দুই নম্বর রেলগেট এলাকায় জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী এই নেতা বলেন, আপনারা ধ্বংসের পক্ষে, আমরা খেলবো ধ্বংসের বিপক্ষে। আপনারা খেলবেন সাম্প্রদায়িকতার ক্ষেত্রে, আমরা খেলবো অসাম্প্রদায়িকতার ক্ষেত্রে। ডেট দিন কবে খেলবেন। শামীম ওসমান আরও বলেন, সারা বাংলাদেশে ঝামেলা করার দরকার কী? আসুন নারায়ণগঞ্জে খেলি। তারেক রহমান সাহেবের নির্দেশে খেলছেন। সাহেব বলছি, যদি আবার ওপর থেকে মারেন। মুসলমান একবার মরে, দুইবার মরে না। তিনি বলেন, আমার সত্যি খালেদা জিয়ার জন্য কষ্ট লাগে। আমি তার জন্য নামাজ পড়ে দোয়া করি। শেখ হাসিনা বলেছিলেন, মানুষ অসুস্থ হলে সে যদি শত্রুও হয়, তার জন্য দোয়া করবে। লন্ডন থেকে নির্দেশ আসছে, আপনারা বাংলাদেশে বসে লাফাচ্ছেন। বিএনপির উদ্দেশ্য ওসমান পরিবারের এই সদস্য বলেন, খোকন সাহাকে নাকি ন্যাংটো করে ঘোরাবে। আপনারা ভাবছেন, আপনারা এ ভাষায় কথা বললে আমরা আপনাদের আঘাত করব। আমরা তা করব না। আমাদের ভুল থাকলে ভুল ধরিয়ে দেন। আপনারা তা করছেন না। শামীম ওসমান আরও বলেন, আপনাদের টার্গেট সরকার ফেলে দেওয়া নয়, শেখ হাসিনাকে ফেলে দেওয়া। কোকো মারা গেল, জাতির পিতার কন্যা গেলেন তার বাসায় সহানুভূতি জানানোর জন্য। তাকে অপমান করা হলো। আপনি (শেখ হাসিনা) আবারও বলছেন, গণভবন পর্যন্ত এলে চা খাওয়াবেন। এটা হতে পারে না। যারা আপনাকে হত্যার চেষ্টা করে, যারা বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের সংসদে বসায়, বাংলার মানুষ চায় না আপনি তাদের চা খাওয়ান। আপনি গণতন্ত্রের কথা বলেন, ওরা এটাকে দুর্বলতা ভাবে। সামনে কঠিন সময় আসছে মন্তব্য করে শামীম ওসমান বলেন, ওরা বাংলাদেশকে ধ্বংস করতে চায়। ওরা ওদের জায়গায় ঠিক আছে। আমরা স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি বিভক্ত। বলেছিলাম, আমি স্লোগান দেব, আপনারা বক্তৃতা দিয়েন। সবাই তো বুঝল না। অনেকেই বুঝে না বোঝান ভান করেন। তারা আমাদের হুমকি দেন। শেখ হাসিনাকে ২১ বার মারার চেষ্টা করা হয়েছে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী কত মানুষকে হত্যা-ধর্ষণ করা হয়েছে পত্রিকায় পাবেন। তখন কোথায় ছিল মানবাধিকার? তিনি বলেন, ’৮১ সালে নেত্রী দেশে ফিরে আকুতি মিনতি করলেন দুই রাকাত নফল নামাজ পড়তে। গেটটা জিয়াউর রহমান খুলে দেয়নি। সেখানে বসে একটু কান্নার সময়ও দেননি। রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে শেখ হাসিনা আর্তনাদ করে কেঁদেছিলেন। আরেক বোন শেখ রেহানা তো কাঁদতেও পারেননি। আপাকে বললাম, অনেক হয়েছে আমাদের ছুটি দেন। তিনি বললেন, তোদের স্বপ্নপূরণ হয়েছে, আমার স্বপ্নপূরণ হয়নি। তিনি বাংলাদেশকে পৃথিবীর মানচিত্রে মাথা উঁচু করে দাঁড় করাতে কাজ করে যাচ্ছেন। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, লন্ডন থেকে যিনি হুকুম দিচ্ছেন, ছেলে হয়ে তো আসলেন না বাংলাদেশে। বুকে কলজে নাই নাকি সাহস নাই? আপনি লন্ডনে আরামে থাকেন নিজের ছেলের বউ তো বড় নামকরা ডাক্তার। শাশুড়ি তো মায়ের মতোই। আমার মা যখন অসুস্থ, আমার বোনরা যেমন সেবা করেছে, আমার বৌও তেমনি সেবা করেছেন। তিনিও তো আসতে পারতেন, আসলেন না। তাদের একজন মেয়েও আছে। দাদীকে দেখতে তো একবারও আসলেন না। যারা তার কথায় নাচছেন, তারা কি ভেবেছেন যারা মায়ের জন্য আসে না, আপনি বিপদে পড়লে সে কি আপনার জন্য আসবে? সমাবেশে যোগ দিতে শনিবার দুপুর থেকেই স্থানীয় আওয়ামী লীগের হাজার হাজার নেতাকর্মী ব্যানার ফেস্টুন হাতে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে হাজির হন। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি নারায়ণগঞ্জের সভাপতি বাবু চন্দন শীল।