অবৈধভাবে শ্রীপুরে বন্ধ কোয়ারী থেকে পাথর উত্তোলন হয় কিভাবে।
জৈন্তাপুর উপজেলার একমাত্র পাথর কোয়ারী হচ্ছে শ্রীপুর পাথর কোয়ারী। কোয়ারীতে পাথর না থাকায় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় পাথর কোয়ারীটি ৫ বছর পূর্বে ত্রিমাত্রিক জরিপ করে পরিত্যক্ত ঘোষণা করে। তারপর কোয়ারী হতে সম্পূর্ণ রুপে পাথর উত্তোলন বন্ধ রয়েছে। কিন্তু এই বন্ধ থাকা শ্রীপুর কোয়ারী হতে পাথর খেকো চক্রের সদস্যরা দিন-রাত পাথর উত্তোলন করে আসলেও স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট আইন প্রয়োগকারীরা রয়েছেন নিরব ভূমিকায়। স্থানীয় সচেতন মহল ও বাসিন্দারা বলেন বন্ধ কোয়ারী জিরো লাইন হতে পাথর উত্তোলন হচ্ছে প্রতিনিয়িত কিন্তু কিভাবে পাথর উত্তোলন হয় আমাদের জানা নেই। সরজমিনে শ্রীপুর পাথর কোয়ারী ঘুরে দেখা যায়, কয়েক বছর পাথর উত্তোলন বন্ধ থাকায় শ্রীপুর পাথর কোয়ারীটি প্রাকৃতিক ভাবে সেজে উঠেছে ভিন্ন রুপে। জিরো লাইন এলাকায় ভারতীয় অংশে পাহাড় ধসে পানির স্রোতে ভেসে এসেছে বেশ কিছু পাথর। যা কোয়ারীটির জিরো লাইন এলাকাকে সাজিয়ে তুলেছে অপরুপ সৌন্দর্য্য। ফিরিয়ে এনেছে সেই আশির দশকের পুরাতন চেহারা। পাহাড়ী ঢলে ভেসে আসার জিরো লাইনের এসব পাথরের উপর লেলুপ দৃষ্টি পড়ে পাথর খেকো চক্রের সক্রিয় সদস্যদের। তারা কতিপয় আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের নামে চাঁদা উত্তোলনের মাধ্যমে ১২৮০নং আন্তর্জাতিক মেইন পিলার ও ১২৮০ (১এস), ১২৮০ (২এস) সাব পিলার অতিক্রমের মাধ্যমে সীমান্তের অভ্যান্তরে প্রবেশ করে দিন দুপুরে দৃষ্টি নন্দন পাথর গুলো উত্তোলন করে নিয়ে আসছে পাথর খেকো চক্রের সদস্যরা। স্থানীয় বাসিন্দা ইব্রাহীম আলী, নজরুল ইসলাম, হারিছ আলী, ধনমিয়া সহ একাধিক ব্যক্তি জানান, গত বছর হতে পাথর খেকো চক্রের সদস্যরা বিভিন্ন ভাবে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের নামে মোটা অংকের উৎকোচের মাধ্যমে পাথর কোয়ারীর জিরো লাইন হতে পাথর সংগ্রহ করে। তারই ধারাবাহিকতায় এই চক্রের বেশ কিছু সক্রিয় সদস্যরা বানের পানি নামার পর হতে নানা অপকৌশলে কোয়ারীর জিরো লাইন হতে পাথর উত্তোলন করছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে অবগত করা হলেও মাঝে মধ্যে ১০-১২দিন বন্ধ রেখে পুনরায় পাথর উত্তোলন শুরু হয়। স্থানীয়রা আরও জানান, জিরো লাইন এলাকাহতে পাথর উত্তোলন কালে বিভিন্ন সময় ভারতীয় খাসিয়ারা শ্রমিকদের গালি গালাজ সহ তাড়িয়ে দিতে দেখা যায়। তাদের বাগান রক্ষায় তারা শ্রমিকদের উপর ক্ষিপ্ত হয়। যে কোন সময় খাসিয়ারা গুলি করতে পারে বলে স্থানীয়দের আশঙ্কা রয়েছে। পাথর খেকো চক্রের সদস্যরা বড় বড় পাথর ভেঙ্গে কয়েক টুকরা করে এসব পাথর খন্ড গুলো শ্রীপুর চা-বাগান, খড়মপুর, সেলিম চৌধুরীর বাগান, মন্ত্রীর বাগানের আশ-পাশ এলাকায় ঝোঁপ জঙ্গলে পাথর নিয়ে এসে মজুত করে রাখে। পরবর্তীতে সময় সুযোগ বুঝে তারা উত্তোলিত পাথর গুলো ক্রাশিং মিলে প্রেরণ করে। এভাবেই জিরো লাইন হতে পাথর উত্তোলন করছে চক্রটি। পাথর উত্তোলনের বিষয়ে জানতে জৈন্তাপুর মডেল থানার ওসি গোলাম দস্তগীর আহমদ বলেন, শ্রীপুর পাথর কোয়ারী হতে পাথর উত্তোলনের বিষয় আমার জানা নেই। তবে বিষয়টি তদন্ত পূর্বক খতিয়ে দেখে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সহকারী কমিশনার (ভূমি) রিপামনি দেবী বলেন, বিষয়টি শুনেছি, দ্রুত সময়ের মধ্যে শ্রীপুর পাথর কোয়ারী পরিদর্শন করে একাজে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।