রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে পাশে চায় বাংলাদেশ।
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে নির্যাতিত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠি বাংলাদেশে প্রবেশ শুরু করে, তার ৫ বছর পূর্ণ হলো। কিন্তু এখনো রোহিঙ্গাদের ফেরানোর কোনো আশা দেখা যাচ্ছে না। রোহিঙ্গা সংকটের দ্রুত সমাধান না করা গেলে বাংলাদেশে নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে রাখাইনে নিরাপদ ও অনুকূল পরিবেশ তৈরিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে মনোনিবেশ করার আহ্বান জানিয়েছে ঢাকা। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের ৫ বছর উপলক্ষ্যে দেয়া এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বিবৃতিতে বলা হয়, দীর্ঘস্থায়ী রোহিঙ্গা সংকট ছয় বছরে পা দিয়েছে। এ সময়ের মধ্যে একজন রোহিঙ্গাকেও প্রত্যাবর্তন করা যায়নি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৭ সালে নির্যাতিত মানুষদের আশ্রয় দিয়ে বিশ্বকে একটি মানবিক বিপর্যয় থেকে রক্ষা করেন। রোহিঙ্গাদের বসবাসকারী এলাকায় মানবিক সহায়তা প্রদান এবং পরিবেশ ও সামাজিক ভারসাম্যহীনতার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ তাদের ভার বহন করে চলেছে। যদি এ সংকট দ্রুত সমাধান না করা হয়, তবে এটি এ অঞ্চল এবং এর বাইরে নিরাপত্তা সমস্যা তৈরি করতে পারে। তাই বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের দ্রুত প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে সরকার যথাসাধ্য চেষ্টা করছে। বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গারা স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করতে চায়। রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে শিক্ষা, খাদ্য, বাসস্থান, স্বাস্থ্যসেবাসহ অন্যান্য সেবা পাচ্ছে। রোহিঙ্গা সংকট দ্বিপাক্ষিক নয় উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, রোহিঙ্গা সংকট কোনো দ্বিপাক্ষিক ইস্যু নয়। এর উৎপত্তি ও সমাধান মিয়ানমারে। বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক চুক্তি অনুযায়ী মিয়ানমারের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে রাখাইনে রোহিঙ্গাদের নিরাপদ, টেকসই ও স্বেচ্ছায় প্রত্যাবর্তনের ব্যবস্থা করার চেষ্টা করেছে। দুর্ভাগ্যবশত, দ্বিপাক্ষিক ব্যবস্থায় মিয়ানমারের অপ্রতিশ্রুতিহীন মনোভাবের কারণে এখনো একজন রোহিঙ্গাও মিয়ানমারে ফিরতে পারেননি। প্রত্যাবাসন শুরু করার ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক ফ্রন্টে বাংলাদেশ সহায়তা করার জন্য বন্ধুত্বপূর্ণ দেশগুলোকে জড়িত করে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে,আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত রাখাইনে নিরাপদ ও অনুকূল পরিস্থিতি তৈরি করা। যত দ্রুত সম্ভব রোহিঙ্গাদের তাদের নিজ ভূমি রাখাইনে নিরাপদ, টেকসই, স্বেচ্ছায় প্রত্যাবাসন শুরু বিষয়ে সংলাপ ও আলোচনার অগ্রগতি হওয়া উচিত। জাতিসংঘ ও অংশীদারদের অবশ্যই রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তাসহ রাখাইনে অনুকূল পরিবেশ তৈরিতে বাস্তব পদক্ষেপ ও প্রকল্প নিতে হবে। এক্ষেত্রে আসিয়ান ভূমিকা নিতে পারে।