ভারতের এলওসির অধীনে রেলওয়ের দুইটি প্রকল্পের কনসাল্টেন্সি সার্ভিসের জন্য চুক্তি স্বাক্ষরিত।
ভারত সরকারের দ্বিতীয় লাইন অফ ক্রেডিটের (এলওসি) অধীনে ‘বাংলাদেশ রেলওয়ের খুলনা-দর্শনা জংশন সেকশনের মধ্যে ডাবল লাইন রেল ট্র্যাক নির্মাণ’ এবং ‘বাংলাদেশ রেলওয়ের পার্বতীপুর-কাউনিয়া সেকশনে মিটারগেজ লাইনকে ডুয়েল গেজ লাইনে রূপান্তর’ নামে দুইটি প্রকল্পের কনসাল্টেন্সি সার্ভিসের জন্য চুক্তিস্বাক্ষর অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট) ঢাকায় রেল ভবনে এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ভারতীয় হাইকমিশন জানায়, উভয় প্রকল্পই ভারত সরকারের এলওসির অধীনে বাংলাদেশ সরকারকে প্রদত্ত ২ বিলিয়ন ডলার রেয়াতি ঋণের সহায়তায় সূচিত হতে যাচ্ছে। বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, ভারত সরকারের লাইন অফ ক্রেডিট পোর্টফোলিওর প্রায় এক-চতুর্থাংশ নিয়ে বাংলাদেশ বর্তমানে ভারতের অন্যতম উন্নয়ন অংশীদার। এর মধ্যে, খুলনা-দর্শনা রেললাইন প্রকল্পটি ভারত সরকারের লাইন অফ ক্রেডিটের অধীনে মোট ৩১২.৪৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয়ে বাস্তবায়িত হচ্ছে। এই রেললাইনের মোট দৈর্ঘ্য হলো ১২৬.২৫ কিলোমিটার (ডাবল লাইন)। যার মাঝে রয়েছে ১৪.৪০ কিলোমিটার লুপ লাইন এবং ১৪৭টি গার্ডার ব্রিজ ও কালভার্ট। এই প্রকল্পটি খুলনা-ঢাকা, খুলনা-চিলাহাটি, খুলনা-রাজশাহী রুটে এবং মংলা বন্দর ও দর্শনা-গেদের মধ্যে যোগাযোগকে উন্নত করার পাশাপাশি পণ্য পরিবহনের ক্ষমতা বৃদ্ধি করবে। এটি হরিয়ান, ভেড়ামারা, সান্তাহার, বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম স্টেশন, আমানুরা, ফরিদপুর, ঠাকুরগাঁও এবং রংপুরে প্রস্তাবিত জ্বালানি ভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রসমূহে জ্বালানি পরিবহনকে সহজ করে দেবে। কনসালটেন্সি সার্ভিসের জন্য চুক্তিটি করা হয়েছে এসটিইউপি কনসালট্যান্ট প্রাইভেট লিমিটেড, এএআরভিইই অ্যাসোসিয়েটস্ আর্কিটেক্টস্ ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যান্ড কনসালট্যান্টস্ প্রাইভেট লিমিটেড এবং বাংলাদেশি অংশীদার ডিজাইন কনসালটেন্টস লিমিটেডের যৌথ উদ্যোগে। এছাড়া, পার্বতীপুর-কাউনিয়া রেললাইন প্রকল্পটি ভারত সরকারের লাইন অফ ক্রেডিটের অধীনে মোট ১২০.৪১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয়ে বাস্তবায়িত হচ্ছে। এই প্রকল্পের লক্ষ্য হলো, পার্বতীপুর এবং কাউনিয়া জংশনের মধ্যে ৫৭ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের একটি ডুয়েল গেজ রেলপথ নির্মাণ করা। যার মাধ্যমে বাংলাদেশ রেলওয়ের লালমনিরহাট-কাউনিয়া-রংপুর-পার্বতীপুর-কাঞ্চন-পঞ্চগড় সেকশন, কাঞ্চন-বিরল-বিরল সীমান্ত সেকশন এবং শান্তাহার-বগুড়া-কাউনিয়া-রংপুর-পার্বতীপুর-কাঞ্চন-পঞ্চগড় করিডোর অংশের সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে ও লাইনের পরিবহন ক্ষমতার উন্নয়ন ঘটবে। এটি বিরল সীমান্ত দিয়ে আন্তঃসীমান্ত যাতায়াত সহজ করতেও সহায়তা করবে। এই প্রকল্পের কাজ শেষ হলে খুলনা অঞ্চল থেকে সরাসরি রংপুর বিভাগে জ্বালানি পরিবহন করা যাবে। কনসালটেন্সি সার্ভিসের জন্য এই চুক্তিটিও করা হয়েছে এসটিইউপি কনসালট্যান্ট প্রাইভেট লিমিটেড, এএআরভিইই অ্যাসোসিয়েটস্ আর্কিটেক্টস্ ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যান্ড কনসালট্যান্টস্ প্রাইভেট লিমিটেড এবং বাংলাদেশি অংশীদার ডিজাইন কনসালটেন্টস লিমিটেডের যৌথ উদ্যোগে। উল্লেখ্য, ভারত সরকারের রেয়াতযোগ্য লাইন অফ ক্রেডিটের অধীনে পরিচালিত এই গুরুত্বপূর্ণ রেল সংযোগ প্রকল্পসমূহের জন্য কনসাল্টেন্সি সার্ভিসের চুক্তিস্বাক্ষরের ফলে উপ-আঞ্চলিক যোগাযোগ, ব্যবসা-বাণিজ্য এবং সমগ্র অঞ্চলের উন্নতি ত্বরান্বিত হবে বলে আশা প্রকাশ করেছে উভয় পক্ষ।