সংসদ নির্বাচনে সেনা বাহিনীর সহায়তা নেয়া হবে: ইসি আলমগীর।
নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর জানিয়েছেন, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটের মাঠে সেনাবাহিনীর সহায়তা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে সেনাদের কোনো বিচারিক ক্ষমতা দিতে চায় না কমিশন। স্ট্যান্ডিং ফোর্স বা টহল বা ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন বা ইভিএমে টেকনিক্যাল সহকারী হিসেবে তারা থাকবেন। বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট) রাজধানীর আগারগাওঁয়ে নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি। মো. আলমগীর বলেন, আগামী সাধারণ নির্বাচনে সেনাবাহিনীর সহযোগিতা নেব, সেটা আমাদের সিদ্ধান্ত আছে। সরকারকে প্রস্তাব দেবো সেনাবাহিনীর সহায়তা দেওয়ার জন্য। আলমগীর বলেন, যে কোনো সংস্থার আমরা সহযোগিতা চাইতে পারি। কাজেই সেনাবাহিনীর যদি সহায়তা চাই, তারা (সরকার) সেই সহায়তা দিতে বাধ্য। তিনি বলেন, জাতীয় নির্বাচনের সময় তারা আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সাহায্যকারী হিসেবে থাকেন। টহল দিতে থাকেন। যেখানে যখন ডাক পড়ে সেখানে যান। নির্দিষ্ট কেন্দ্রে থেকে পুলিশ আনসার যেভাবে করেন সেভাবে তো করা সম্ভব না। স্ট্যান্ডিং ফোর্স হিসেবে থাকেন। তিনি আরও বলেন, ভোট চলাকালে স্বরাষ্ট্র, জনপ্রশাসন, স্থানীয় সরকার ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণ চায় না ইসি। কয়েকটা রাজনৈতিক দলের প্রস্তাব ছিল যেন নির্বাচনকালীন সময়ে ওই মন্ত্রণালয়গুলো নির্বাচন কমিশনের অধীনে ন্যাস্ত করা হয়। আমরা সেটার সঙ্গে একমত হই নাই। তিনি বলেন, ভোটের সময় চারটি মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণ কমিশন চায় বলে যে সংবাদ প্রচার হয়েছে, সেটি সঠিক নয়। তারা সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কাছ থেকে যা যা সহায়তা প্রয়োজন তাই চান। এক প্রশ্নে আলমগীর বলেন, আইন-শৃঙ্খলার বাইরে তাদের দেখার সুযোগ নাই। ইভিএমে যেখানে ভোট হয় সেখানে তাদের কিছু এক্সপার্ট লোক আছে। কোনো সমস্যা হলে সেটা দেখার জন্য তারা থাকবেন, আইন-শৃঙ্খলার দায়িত্বে নয়। তারা থাকবেন টেকনিক্যাল সহকারী হিসেবে। এছাড়া অন্য কোনো ভূমিকা রাখার সুযোগ নেই।’ তবে কমিশনকে চাহিদা অনুযায়ী এসব মন্ত্রণালয়কে ব্যবস্থা নিতে হবে জানিয়ে তিনি বলেন, সকল সংস্থা ও মন্ত্রণালয়ে নির্বাচন কমিশন সাহায্য চাইলে তারা সাহায্য করতে বাধ্য। নির্বাচন কমিশন সংবিধানের আলোকে নির্বাচন সংক্রান্ত সময়ে যে সমস্ত বিষয়ে তাদের সহযোগিতা নেয়া দরকার, সে বিষয়ে অবশ্যই তাদেরকে বাধ্য করা হবে। সেটাই আমরা বলেছি। নির্বাচন কমিশন সর্বোচ্চ ১৫০ আসনে ইভিএমে ভোট করার সিদ্ধান্ত হলেও কতগুলো আসনে এই মেশিন ব্যবহার হবে-সেটি এখনও চূড়ান্ত হয়নি বলেও জানান মো. আলমগীর। তিনি বলেন, আমাদের সক্ষমতা আছে ৭০ থেকে ৮০ টা। পরিস্থিতি যদি এমন হয় যে আমরা ১৫০ আসনেই করতে পারব, তাহলে ১৫০ আসনেই করব। যদি আমাদের প্রকিউরমেন্ট করা সম্ভব না হয় (নতুন মেশিন কেনা না গেলে) তাহলে ৭০/৮০ আসনেই হতে পারে। মেশিন যদি আরও নষ্ট হয়ে যায় তাহলে ৫০ টায় হতে পারে। ১৫০ আসনে ইভিএমে ভোট করতে আরও দেড় থেকে দুই লাখ ইভিএম কিনতে হবে বলে জানান এই কমিশনার। সরকারের সঙ্গে নির্বাচন কমিশন আঁতাত করেছে বলে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সরকারের সঙ্গে আমাদের কোনো যোগাযোগ নাই। এক প্রশ্নে নির্বাচন কমিশনার বলেন, কোনো দল আসলেও নির্বাচন হবে, না আসলেও হবে। ৩৯ টি রাজনৈতিক দল আছে। কোনো দল যদি না আসে নির্বাচন যে বন্ধ রাখতে হবে এমন কথা তো কোথাও বলা নাই। আইন অনুযায়ী, নির্বাচন করাটাই বাধ্যকতামূলক। না হলে আমরাই সংবিধানবিরোধী কাজ করব, সংবিধান ভঙ্গের দায়ে দায়ী হব। তিনি বলেন, এ মাসের শেষে অথবা সামনের মাসের শুরুতে রোডম্যাপের বিষয় চূড়ান্ত হবে। রোডম্যাপে থাকবে সুষ্ঠু নির্বাচন করতে গেলে কী কী কাজ করা প্রয়োজন, সেগুলো কীভাবে বাস্তবায়ন করব, কী চ্যালেঞ্জ থাকবে, কীভাবে মোকাবিলা করব।