দায়িত্বজ্ঞানহীন কোনো কথা বলা সমীচীন নয়: সেতুমন্ত্রী।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, প্রত্যেককে কথাবার্তা, আচার-আচরণে দায়িত্বশীল হতে হবে। এ সময় দায়িত্বজ্ঞানহীন কোনো কথা বলা সমীচীন নয়। ক্ষমতার দাপট দেখানো সমীচীন নয়। ঠান্ডা মাথায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে। মানুষের জন্য কাজ করতে হবে। শনিবার (১৩ আগস্ট) দুপুরে মহিলা শ্রমিক লীগ আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের প্রসঙ্গ টেনে ওবায়দুল কাদের বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পেছনে বিশ্বাসঘাতক যে রাজনৈতিক শক্তি, ওই শক্তির সবার নাম আমরা জানি না। সবার ভূমিকা এখনো পরিষ্কার নয়। জুলিয়াস সিজার থেকে মহাত্মা গান্ধী, কোনো রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডে অবলা নারীকে হত্যা করা হয়নি। অবুঝ শিশুকে হত্যা করা হয়নি। অন্তঃসত্ত্বা নারীকে হত্যা করা হয়নি। পঁচাত্তরে অবলা নারী, অবুঝ শিশু, অন্তঃসত্ত্বা নারীও রেহাই পায়নি। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর খুনিরা থাইল্যান্ডে পালিয়ে গেছে। কে পাঠিয়েছে, জেনারেল জিয়াউর রহমান। থাইল্যান্ড থেকে আরও কয়েকটি দেশে বাংলাদেশ দূতাবাসে চাকরি দেন জিয়াউর রহমান। পুনর্বাসন করেন, পুরস্কৃত করেন। সবচেয়ে জঘন্য কাজটি জিয়াউর রহমান করেন। ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, বিএনপি আমাদের শত্রু ভাবে। অথচ ইতিহাস বলে আমাদের সঙ্গে শত্রুতা তারাই করেছে বারেবারে। আমরা শত্রুতা করিনি। ২১ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীকে টার্গেট করে গ্রেনেড হামলা করার পরও তিনি কোকোর মৃত্যুর পর বেগম জিয়ার বাড়িতে ছুটে গিয়েছিলেন শোকাহত মাকে সান্ত্বনা দিতে। ঘরের দরজা বন্ধ, বাইরের গেট বন্ধ শেখ হাসিনার মুখের ওপর। গণভবনে সংলাপ করেছি কিন্তু তারা আমাদের শত্রুই ভেবে এসেছে, শত্রুতাই করছে। সারা বিশ্বের নেতিবাচক প্রভাব আজ বাংলাদেশ মোকাবিলা করছে। আমরা জানি, অনেক মানুষের কষ্ট হচ্ছে। কস্ট অব লিভিং যেভাবে বেড়ে গেছে, মানুষ কষ্ট পাচ্ছে এটা ঠিক। গরিব মানুষ, প্রান্তিক মানুষ। কিন্তু আমাদের সামনে কোনো উপায় ছিল না, বলেন তিনি। পশ্চিমা দেশগুলোর পরিস্থিতি তুলে ধরে তিনি বলেন, কেউই তো আজকে আরামে নেই। বাংলাদেশের জনগণ যাদের কষ্ট হচ্ছে, আপনাদের শুধু এটুকু বলব, চেষ্টার কোনো ত্রুটি নেই। শেখ হাসিনা, আজকে তার ঘুম নেই। আন্তরিকভাবে আপনাদের এই সংকট উত্তরণের জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছেন। করোনাকালেও তিনি রাতে ঘুমাতে পারেননি। এখনো বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর ঘুম হারাম হয়ে গেছে। কীভাবে মানুষকে একটু আরাম দেয়া যায়, স্বস্তি দেয়া যায় সেটাই আমাদের নেত্রী করে যাচ্ছেন। তিনি মানুষকে স্বস্তি দিতে চান। তিনি আরও বলেন, পৃথিবীর বহু দেশ আজকে সমস্যায় জর্জরিত। এটাকে কেন্দ্র করে ফ্রান্স, আমেরিকার বিরোধী দল সরকার উৎখাতে নামেনি। যুক্তরাজ্য, জার্মানি, জাপানের বিরোধী দল সরকার উৎখাতে প্রোটেস্ট করেনি। আমাদের প্রশ্ন সেখানে, সহযোগিতা চেয়েছিলাম আমরা। এই সংকটে সারা দুনিয়া সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। আর বাংলাদেশে তারা সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র করছে। নিজেরা ইচ্ছামতো মিছিল করছে পল্টন-প্রেসক্লাবের সামনে। এতদিন বলত, আওয়ামী লীগ আমাদের মিছিল-মিটিং করতে দেয় না। এখন যখন নেত্রী বলেছেন, ওরা করুক। যখন মিছিল মিটিং করতে পারছে তখন তাদের সাহসের ডানা বিস্তারিত হয়ে গেছে। এখন তারা বলে বিদেশি শক্তির চাপে বাধা দিচ্ছে না। তাহলে এখন স্বীকার করলেন পুলিশ বাধা দিচ্ছে না। বিদেশি শক্তির চাপে মাথানত করার মতো লোক বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা নয়। মনে রাখবেন কোনো শক্তির কাছে মাথানত করি না আমরা। শেখ হাসিনা আপন শক্তিতে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নিয়ে এগিয়ে যান। আমাদের সমস্যা, আমাদের সংকট, আমাদেরই সমাধান করতে হবে, বলেন ওবায়দুল কাদের।