বিয়ে-চাকরি ও টিকটকের ফাঁদে ফেলে নারী পাচার।
বেশি বেতনে চাকরির লোভ দেখানোর পাশাপাশি টিকটক তারকা বানানোর প্রভোলভ দেখিয়ে ভারতে নারী পাচারকারী চক্রের মূল হোতাসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডি। গ্রেপ্তাররা হলেন- রানা আহমেদ, সুজন মিয়া, সাহাবুদ্দীন এবং নাইমুর রহমান ওরফে শামীম ওরফে সাগর। মঙ্গলবার রাতে ঝিনাইদহ ও চুয়াডাঙ্গা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানান সিআইডির মানবপাচার প্রতিরোধ ইউনিটের বিশেষ পুলিশ সুপার নজরুল ইসলাম। পরের দিন বুধবার রাজধানীতে এক সংবাদ সম্মেলনে এই পাচার চক্র সম্পর্কে বিস্তারিত জানান তিনি। বলেন, স্ত্রী ও শ্যালিকাকে ভারতে পাচারের ঘটনায় ইউসুফ নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিলো। বর্তমানে কারাগারে থাকা ইউসুফের দেয়া তথ্যেই চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গত বছরের ৪ মে ঝিনাইদহের বাঘাডাঙ্গা সীমান্ত দিয়ে ইউসুফ তার স্ত্রী ও শ্যালিকাকে ভারতে পাচার করেন। সেখানে ইউসুফের সহযোগীরা তাদের যৌনপল্লীতে বিক্রি করে দেয়। সেখানে যৌন নির্যাতনের শিকার হন ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ের ওই দুই বোন। পরে তারা কৌশলে যৌনপল্লী থেকে পালিয়ে ভারতীয় পুলিশের সহায়তায় গত ২২ মার্চ দেশে ফেরেন। জবানবন্দিতে ওই দুই নারী জানান, বছর দুই আগে তারা গাজীপুরের শ্রীপুরের একটি কারখানায় কাজ নেন। সেখানে থাকার সময় বড় বোনের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন ইউসুফ। পরে বিয়েও করেন। গত বছর বেশি বেতনে চাকরির কথা বলে ইউসুফ তার স্ত্রী ও শ্যালিকাকে ভারতের নারী পাচারকারীদের কাছে বিক্রি করে দেন। সিআইডির এই কর্মকর্তা জানান, এই মানবপাচার চক্রটি কয়েক বছর ধরে এলাকায় সক্রিয় ছিল। তারা এ পর্যন্ত ২০ জন নারীকে পাচার করেছে বলে প্রাথমিকভাবে শিকার করেন। তারা প্রথমে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে নারীদের সংগ্রহ করে সীমান্ত এলাকায় নিয়ে রাখতেন। পরে সেখানের আরেকটি চক্র সুযোগ বুঝে ওপারের (ভারত) দালালদের কাছে পৌঁছায় দিতো। বিশেষ পুলিশ সুপার নজরুল ইসলাম বলেন, সংসার করা উদ্দেশ্য ছিল না ইউসুফের। ভারতে পাচার করার জন্যই তিনি বিয়ে করে। গ্রেপ্তার চারজনের নামে বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা তদন্তাধীন। এই চক্রের দেশি-বিদেশি সদস্যদের তথ্য সংগ্রহের চলছে। এর সঙ্গে আর কারা কারা জড়িত, তাদের খোঁজা হচ্ছে।