সমিতির মাসিক কিস্তি দিতে না পারায় গৃহবধূর আত্মহত্যা।
রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর মাতুয়াইলে ঋণগ্রস্ত পারিবারের এক গৃহবধূ সমিতির মাসিক কিস্তি দিতে না পারায় হতাশাও অভিমানে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। মঙ্গলবার (২ আগস্ট) সন্ধ্যায় ভাড়া বাসায় এ ঘটনাটি ঘটে। জানা গেছে, নিহত গৃহবধূর নাম মোছা. রাশিদা আক্তার ডলি (৪০)। ডলি বরিশাল জেলার বানারিপাড়া উপজেলা মো. মিজানুর রহমান মিঠুর স্ত্রী। কর্ণফুলী গার্ডেন সিটিতে একটি কাপড়ের দোকানে চাকরি করেন মিঠু। তার বাবার নাম আব্দুর রাজ্জাক। যাত্রাবাড়ীর মাতুয়াইলে লতিফ ভূঁইয়া কলেজের পাশে সেলিমের বাড়িতে পরিবারের সাথে ভাড়া বাসায় থাকতেন তারা। দুই ছেলের জননী ছিলেন ডলি এবং দুই ভাই দুই বোনের মধ্যে ডলি ছিল তৃতীয়। নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, অচেতন অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে এবং পরে সেখান থেকে রাত পৌনে আটটায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জরুরী বিভাগে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। মৃতার স্বামী মিজানুর রহমান মিঠু জানান, রায়েরবাগে আলাফালা সমবায় সমিতি থেকে ডলির বাবা আব্দুল রাজ্জাকের ব্যবসায়িক কাজে সাড়ে তিন লক্ষ টাকা লোন করে দিয়েছিল। তার মাসিক কিস্তি ছিল ২৭ হাজার টাকা। সেখানে প্রায় লক্ষাধিক টাকা মাসিক পরিশোধ করলেও পরবর্তীতে তার বাবার ব্যবসায়িক সমস্যার কারণে কিস্তি পরিশোধ করতে সমস্যা হচ্ছে। তিনি আরও জানান, সকালে ওই সমিতি থেকে এক নারী টাকার জন্য বাসায় এসে ডলিকে চাপ দেয় আজ অন্তত পক্ষে ২০ হাজার টাকা তাকে সমিতিতে জমা দিতে হবে বলে রাগারাগি করে। ডলির বাবা আজ কোন ভাবেই টাকা পরিশোধ করতে পারবে না বলে জানিয়ে দেয়। এই টাকা নিয়ে হতাশা ও অভিমানে সন্ধ্যায় সবার অগোচরে ভাড়া বাসায় ডলি সিলিং ফ্যানের সাথে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ফাঁস নেন বলে দাবি করেন তিনি। মিজানুর আরও জানান, তার শ্বশুর আব্দুল রাজ্জাকের মশার কয়েল ও তেলাপোকার ঔষধের কারখানা রয়েছে। পূর্বে তিনি ব্যবসায়িকভাবে অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হন এবং তার বয়স বেশি থাকায় তাকে কেউ লোন দিবে না বলে ডলি তার বাবাকে লোন তুলে দিয়েছিল। বর্তমানে ছয় মাস যাবত ডলির বাবা আমাদের বাসায় একই সঙ্গে থাকেন। ঢামেক পুলিশ ক্যাম্পের পুলিশ পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া জানান, মৃতদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে।