ক্যাম্পাসে এসে ছেলে হত্যার বিচার চাইলেন বুলবুলের মা
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে ছুরিকাঘাতে নিহত শাবি শিক্ষার্থী বুলবুল আহমেদের পরিবারের সদস্যরা ক্যাম্পাসে এসেছেন। এসময় বুলবুলের মা ইয়াছমিন বেগম, বড় ভাই জাকারিয়া আহমেদ, বড় বোন সোহাগী আক্তার, বুলবুলের মামা মো. রাকিব উদ্দিনসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা ছিলেন। রোববার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে আসে বুলবুলের পরিবার। এসময় সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে তদন্তের মাধ্যমে বুলবুল হত্যার বিচার চেয়েছেন মা ইয়াছমিন বেগম। ‘এখনো ভালো করে তদন্ত হয়নি’ উল্লেখ করে বুলবুলের মা বলেন, আমার ছেলেকে যারা মেরেছে এবং যারা এ ঘটনায় জড়িত তাদের কঠোর শাস্তি চাই। আজকে যদি আমার ছেলে ঝালমুড়িও বেছতো তাইলে কি মারা যেতো, কেউ কি মাডার করতো। ‘আমার পুত আর পাইতাম না গো, আমার বুলবুলে আমারে মা ডাহে না গো, আমার পুত আমায় মা ডাহে না’ এভাবে কান্নাজড়িত কন্ঠে ভেঙে পড়েন বুলবুলের মা। পরে শাহপরান হলে যান তার পরিবারের সদস্যরা। এসময় তার পরিবারের সদস্যরা শাহপরান হলে ২১৮ নং কক্ষে যান। পরে ছাত্র উপদেশ ও নির্দেশনা পরিচালক অধ্যাপক আমিনা পারভীন, শাহপরান হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মো. মিজানুর রহমান খান, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ইশরাত ইবনে ইসমাইল, মামলার তদন্তকারী সাব ইনস্পেক্টর দেবাশীষ দেবের উপস্থিতিতে বুলবুলের ব্যবহৃত জিনিসপত্র হস্তান্তর করা হয়। পরিবারের কাছে বুলবুলের মালপত্র হস্তান্তরকালে কান্নায় ভেঙে পড়ে তার পরিবার। বুলবুলের ব্যবহৃত জিনিসপত্র হস্তান্তরের বিষয়ে শাহপরান হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান খান বলেন, বুলবুলের পরিবারের কাছে আবাসিক হলে থাকা সব মালামাল হস্তান্তর করা হয়েছে। শুধুমাত্র তার মানি ব্যাগ ও হাতঘড়ি রেখে দেওয়া হয়েছে। এগুলো পুলিশ সিজ করেছে। এ বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই দেবাশীষ দেব বলেন, বুলবুলের মোবাইল ফোন আগেই সিজ করা হয়েছে। এখন তার মানিব্যাগ ও হাতঘড়ি সিজ করা হয়েছে। এগুলো নিতে হলে তার পরিবারকে আদালতের মাধ্যমে নিতে হবে। আদালতে আবেদন করলে পরবর্তীতে তাদের কাছে এগুলো হস্তান্তর করা হবে। মামলার অগ্রগতি নিয়ে তিনি বলেন, এখনো তদন্ত চলছে। ভালোভাবে তদন্ত করার পর আমরা চার্জশিট দেবো। যে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে তারা স্বীকারোক্তিমুুলক জবানবন্দি দিয়েছে। তারা এখন কারাগারে আছে। উল্লেখ্য, গত ২৫ জুলাই শাবিপ্রবির গাজীকালুর টিলায় ছুরিকাঘাতে নিহত হন লোক প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী বুলবুল আহমেদ। ওইদিন রাতেই বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মুহাম্মদ ইশফাকুল হোসেন বাদী হয়ে জালালাবাদ থানায় অজ্ঞাতনামা দিয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে প্রথমে তিনজনকে আটক করে। এরমধ্যে আবুল হোসেন নামের একজন হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করেন। সেইসাথে হত্যাকান্ডে জড়িত আরো দুইজনের নাম প্রকাশ করেন। পরবর্তীতে পুলিশ কামরুল আহমদ ও মো. হাসান নামের ওই দুইজনকে আটক করে। তাদের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে প্রথমে আবুল হোসেন এবং পরে বাকি দুইজনকে আদালতে তোলা হলে তারা স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দেন।