গোলাপগঞ্জে ব্যক্তি উদ্যোগে চিড়িয়াখানা।
গোলাপগঞ্জে আনারস বাগানের পর এবার জনপ্রিয় হয়ে উঠছে মিনি চিড়িয়াখানা। চিড়িয়াখানাটি মিনি হলেও এখানে রয়েছে হরিণসহ নানা প্রজাতির পশু-পাখি। এ চিড়িয়াখানাটি পারিবারিকভাবে গড়ে তুলেছেন গোলাপগঞ্জ উপজেলার ঢাকাদক্ষিণ ইউনিয়নের কানিশাইল গ্রামের বড়বাড়ির ব্যবসায়ী সয়েফ উদ্দিন চৌধুরী। এই মিনি চিড়িয়াখানার খবর আস্তে আস্তে চারদিকে ছড়িয়ে পড়ায় বিভিন্ন স্থান থেকে চিড়িয়াখানাটি দেখতে ছুটে আসছেন দর্শনার্থীরা। বর্তমানে গ্রাম্য এলাকায় গড়ে উঠা এ চিড়িয়াখানায় রয়েছে- ৮টি হরিণ, ৩টি উট পাখি, ৩টি ইমো, ৩টি ময়ূর পাখিসহ বিভিন্ন প্রজাতির কবুতর। জানা গেছে, সয়েফ চৌধুরীর ছোট বেলা থেকেই পশু পাখির প্রতি একটা ভালবাসা ছিল। ৬/৭ বছর আগে শ্রীমঙ্গলে এক আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়ে হরিণ দেখে পালনের আগ্রহ জন্মায়। কিন্তু তখন হরিণ পালনের লাইসেন্স বন্ধ ছিল। কিন্তু সম্প্রতি আবারো ওই আত্মীয়ের বাড়িতে গেলে জানতে পারেন বনবিভাগ আবারো লাইসেন্স দেওয়া শুরু করেছে। তখন হরিণ পালনের জন্য বন বিভাগ থেকে লাইসেন্স তিনি লাইসেন্স সংগ্রহ করেন। এরপর ওই আত্মীয়ের কাছ থেকে ৫টি হরিণ নিজ বাড়িতে নিয়ে আসেন। এরপর চিন্তা করলেন একটি মিনি চিড়িয়াখানা করার। যেই চিন্তা সেই কাজ। একে একে বিভিন্ন জায়গা থেকে সংগ্রহ করেন ময়ূর, উট পাখি, ইমো, টার্কি ও নানা জাতের কবুতর। মিনি চিড়িয়াখানার খবর পেয়ে দেখতে আসা লক্ষণাবন্দ ফুলসাইন্দ গ্রামের অলি খান বলেন, গ্রাম্য এলাকায় চিড়িয়াখানা হয়েছে জানতে পেরেই বন্ধুদের নিয়ে ছুটে এসেছি। আমরা ঘুরে ঘুরে হরিণ, ময়ূরসহ সবগুলো পশু-পাখি দেখেছি। আসলেই খুব ভাল লাগছে। এটি ছোট পরিসরে হলেও ইচ্ছা হলে যে গ্রাম এলাকায়ও শহরের মতো কিছু গড়ে তুলা যায় তা প্রমাণ করলেন সায়েফ চৌধুরী। ধারাবহর একটি স্কুলের ৫ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী নাঈমা জানায়, হরিণ আর ময়ূর আমি বইত পড়ছি, ছবিও দেখেছি। আইজ চোখ দিয়া দেখলাম। খুশি লগের, আরকদিন ইস্কুলর হকলরে লইয়া আইমু। স্থানীয় এলাকার বাসিন্দা জয়নাল মিয়া বলেন, ব্যক্তি উদ্যোগে চিড়িয়াখানা গড়ে তুলা খুবই কষ্টদায়ক। এরপরও সয়েফ চৌধুরী মিনি চিড়িয়াখানা গড়ে তুলে আমাদের গ্রামের সুনাম চারদিকে আরও ছড়িয়ে পড়ছে। তিনি বলেন, মিনি চিড়িয়াখানার পশু-পাখি দেখতে প্রতিদিন শতাধিক মানুষ সয়েফ চৌধুরীর বাড়িতে আসছেন। চিড়িয়াখানার স্বপ্নদ্রষ্টা ছয়েফ চৌধুরীর জানান, দীর্ঘদিন থেকেই আমার শখ ছিল পশু-পাখি সংগ্রহ করে একটি মিনি চিড়িয়াখানা গড়ে তোলা। অবশেষে অল্প অল্প করে হলেও কিছুটা স্বপ্ন পূরণ হচ্ছে। আগামীতে আরও বিভিন্নজাতের পশু-পাখি সংগ্রহ করা হবে বলেও তিনি জানান।