জাফলংয়ে বেড়েছে পর্যটকদের ভিড়।
গোয়াইনঘাট উপজেলার পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে পর্যটকদের ভিড় বেড়েছে। গত শুক্র ও শনিবার ছুটির দিনে জাফলং, বিছনাকান্দি ও রাতারগুলে পর্যটকদের সরব উপস্থিতি ছিল লক্ষণীয়। তবে সবচেয়ে বেশি পর্যটকের ভিড় ছিল জাফলংয়ে। বেশির ভাগ পর্যটকই সিলেটের বাইরের। সরেজমিনে জাফলং পর্যটনকেন্দ্রে দেখা যায়, সকাল থেকেই নানা বয়সের পর্যটকেরা জাফলংয়ে ভ্রমণে আসেন। দুপুরের দিকে জাফলংয়ের জিরো পয়েন্টে ভিড় বাড়তে থাকে। বন্ধু-বান্ধব ও পরিবার নিয়ে ঘুরে আনন্দ ভাগাভাগি করছেন। কেউ কেউ জিরো পয়েন্ট থেকে নৌকা নিয়ে ছুটে যাচ্ছেন মায়াবী ঝরনায়। চা-বাগান ও খাসিয়া পল্লিতে ছিল পর্যটকদের আনাগোনা। মায়াবী ঝরনায় টাঙ্গাইলের সুমন মিয়ার বলেন, ‘করোনার সময় দীর্ঘদিন থেকে ঘরবন্দী ছিলাম। এখন পর্যটন স্পটগুলো খোলায় বেড়াতে এসেছি। এখানে এসে মনটা খুব ভালো হয়ে গেছে। প্রকৃতির কাছাকাছি আসতে পেরে শরীর ও মন প্রশান্তিতে ভরে গেছে। পরিবার-পরিজন নিয়ে ঘুরতে আসা আলাউদ্দিন বলেন, ‘এত দিন কোথাও যাওয়া হয়নি। পরিবারের সদস্যদের বায়না ছিল জাফলংয়ে আসার। তাই তাদের নিয়ে ঘুরতে এসেছি। তা ছাড়া এখানকার রাস্তাঘাট ভালো থাকায় কোনো সমস্যা হয়নি।স্থানীয় পর্যটন ব্যবসায়ীরা জানান, পর্যটনকেন্দ্র খোলার পর থেকে আস্তে আস্তে পর্যটকদের আনাগোনা বেড়েছে। তবে সপ্তাহের শুক্র ও শনিবার এখানে পর্যটকের পরিমাণ বেশি থাকে। তা ছাড়া অন্যান্য দিন কিছুটা কম থাকে। তাঁদের বেচাকেনাও বেড়েছে। তাই তাঁরা বেশ খুশি। কসমেটিকস ব্যবসায়ী আব্দুল কাদির বলেন, ‘পর্যটন খোলার পর থেকেই প্রতিদিনই পর্যটকেরা আসছেন। শুক্র ও শনিবার পর্যটক বেশি আসেন। বেচাকেনাও এখন ভালো।’ ফটোগ্রাফার মুন্না মিয়া বলেন, ‘শুক্র ও শনিবার প্রচুর দর্শনার্থী এসেছেন। এই দুই দিন ফটো তুলে ভালোই রোজগার হয়েছে। এতে আবারও কর্মমুখর হয়ে পড়েছি আমরা। মাসুক রেস্টুরেন্টের প্রোপ্রাইটর আসাদ মিয়া বলেন, ‘করোনার কারণে দীর্ঘ চার মাসের মতো রেস্টুরেন্ট বন্ধ রাখা হয়েছিল। এ সময় আমরা আর্থিক সংকটে পড়েছি। পর্যটনকেন্দ্র খোলার পর থেকে রেস্টুরেন্ট চালু রয়েছে। এখন প্রতিদিনই কাস্টমার পাচ্ছি। পর্যটকদের আনাগোনা বাড়ায় খুব খুশি আমি। জাফলং গ্রিন রিসোর্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বাবলু বখত বলেন, ‘করোনার প্রায় কয়েক মাস রিসোর্ট বন্ধ ছিল। এখন পর্যটন খোলায় পুরোদমে চলছে ব্যবসা। গতকাল শনিবার পর্যন্ত রিসোর্টের ৯০ শতাংশ কক্ষ বুকিং হয়েছে। পর্যটকদের আনাগোনা বাড়ায় আমরা অনেক খুশি। এদিকে গত দুই দিন ধরে প্রকৃতির অপ্সরা খ্যাত বিছনাকান্দি ও সোয়াম ফরেস্ট রাতারগুলেও ছিল পর্যটকে মুখর। প্রতিদিনই দলবেঁধে পর্যটকেরা ছুটে যাচ্ছেন সেখানে। নৌকা নিয়ে ঘুরে ঘুরে দেখছেন সৌন্দর্য। তাই স্থানীয় নৌকার মাঝিরাও বেশ খুশি। এদিকে পর্যটকদের স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে বেশ সচেতন পুলিশ কর্মকর্তারা। জাফলং টুরিস্ট পুলিশের ওসি মো. রতন শেখ বলেন, গত শুক্র ও শনিবার জাফলংয়ে প্রচুর পর্যটক ঘুরতে এসেছেন। পর্যটকেরা যাতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সৌন্দর্য উপভোগ করেন, সে জন্য টুরিস্ট পুলিশের পক্ষ থেকে সবাইকে আহ্বান করা হচ্ছে। পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তা দিতে জাফলং টুরিস্ট পুলিশের সদস্যরা প্রস্তুত রয়েছেন।