সাত দিনের মধ্যে পরীমণিকে মুক্তি না দিলে বৃহত্তর আন্দোলনের ডাক হঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।
পরীমণির মুক্তির দাবিতে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানব বন্ধন করেছে ‘বিক্ষুব্ধ নাগরিকজন’ নামের একটি সংগঠন। মানববন্ধনে আগামী সাত দিনের মধ্যে মরীমণিকে মুক্তি না দিলে বৃহত্তর আন্দোলনের ডাক দেয়া হবে বলেও হঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।
শনিবার (১৪ আগস্ট) আয়োজিত ওই সমাবেশে বক্তারা বলেন, সামান্য মাদক মামলায় একজন মানুষকে জামিন না দিয়ে দুইবার রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। একে অযৌক্তিক দাবি করে তারা প্রশ্ন তোলেন, মাদক মামলায় অনেকে জামিনে বের হলেও পরীমণির জামিন আবেদন কেন বারবার নামঞ্জুর করে রিমান্ডে নেওয়া হচ্ছে।
সমাবেশে লেখক ও মানবাধিকার কর্মী শাশ্বতী বিপ্লব বলেন, যাকে যখন ভালো লাগবে না তাকে তখন নষ্ট মেয়ের তকমা লাগিয়ে দেবেন, এটা হতে পারে না। নষ্ট মেয়ের তাকমা লাগানো খুবই সহজ। প্রতিটি প্রতিবাদী নারীকে নষ্টা মেয়ে তকমা লাগাতে পারেন। কারা এই মেয়েদের নষ্ট করেছে? নষ্ট মেয়ে ঠিক করা তো আপনাদের কাজ না। মোল্লাদের মতো আপনারা নারীদের চরিত্র হননে ব্যস্ত হয়ে গেছেন। এই কাজের জন্য আপনাদের আমরা ধিক্কার জানাই।
বিক্ষুব্ধ নাগরিকজনের আহ্বায়ক ও শ্রাবণ প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী রবীন আহসান বলেন, গণমাধ্যম টানা দীর্ঘসময় পরীমণিকে নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করেছে। পুলিশ যেভাবে পরীমণিকে উপস্থাপন করেছে, সংবাদমাধ্যম সেভাবেই কাজ করেছে। স্বাধীনতার ৫০ বছর পরে এই প্রথম এভাবে নারী নিপীড়নের সংবাদ প্রচার হয়েছে। আমরা শুধু এখানে পরিমনির জন্য দাঁড়াইনি, আমরা দাঁড়িয়েছি বাংলাদেশের পুরো নারী সমাজের জন্য। বাংলাদেশের নারীদেরকে পাথর ছুঁড়ে মারার মতো একটা প্রেক্ষাপট তৈরি করা হয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, গণমাধ্যম ও পুলিশ সেখানে একসাথে কাজ করছে।
সাংবাদিকদের উদ্দেশ্য করে এই প্রকাশক বলেন, আপনারা কেন প্রশ্ন করেন না, একটা বোট ক্লাব কেন পুলিশ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা চালাবে? বাংলাদেশের সব জায়গায় মদের বোতল পাওয়া যায়। হাজার বোতল মদের কোনো খবর নেই, পাঁচ বোতল মদের জন্য তাকে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, পরীমণিকে অতি দ্রুত মুক্তি না দিলে সমগ্র সাংস্কৃতিক সমাজকে নিয়ে বড় আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। কেউ আমাদের সঙ্গে না থাকলেও ‘সামাজিক গণমাধ্যম’ আমাদের হাতে আছে।
সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন উন্নয়নকর্মী মুশফিকা লাইজু, নির্মাতা রাশিদ পলাশ, নির্মাতা সংগীতা ঘোষ, প্রকাশক দেলওয়ার হোসেন, যুব ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক খান আসাদুজ্জামান মাসুম, গণজাগরণ মঞ্চের উদ্যোক্তা আকরামুল হক, মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসাইন প্রমুখ। এছাড়া লন্ডন থেকে সংহতি জানিয়ে যুক্ত ছিলেন সাংবাদিক ও লেখক আব্দুল গাফফার চৌধুরী, শ্রমিক ফেডারেশনের গাজীপুর সভাপতি হেলাল মিয়া ও নাট্যব্যক্তিত্ব আজাদ আবুল কালাম।