জৈন্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১০২পদের ৪৩টি শূন্য
সিলেটের প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রীর নিজ উপজেলা জৈন্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হতে চিকিৎসাসেবা বঞ্চিত হচ্ছে উপকারভোগীরা। স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রের প্রথম হতে ৪র্থ শ্রেনী পর্যন্ত ১০২ জন কর্মকর্তা-কর্মচারির বিপরীতে সেবা দিচ্ছে ৫৯জন। কাগজপত্র ৩৮পদ শূণ্য থাকলেও মোট ৪৩টি পদ শূণ্য তারমধ্যে ডেপুটেশনে অন্যত্র রয়েছে ৪জন, বহিস্কৃত রয়েছেন ১জন, পদ শূণ্য ৩৮টি রয়েছে।
সরজমিনে জৈন্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ঘুরে দেখা গেছে স্বাস্থ্য সেবার ভিন্ন চিত্র। অনেক সময় জরুরী বিভাগে মিলছে না ডাক্তার। সেবা বঞ্চিত হয়ে ফিরতে হচ্ছে রোগীরা। স্বাস্থ্য সেবা নিয়ে দূর্ভোগের শেষ নেই। চিকিৎসা বঞ্চিত হয়ে জেলা শহরে ছুটতে হয় রোগীদের।
সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্য দপ্তরের সাথে কথা বলে জানা যায়, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১০২টি পদের বিপরীতে কাজ করছে ৫৯ জন কর্মকর্তা-কর্মচারি। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সহ ৩৮টি পদ শূণ্য, ১জন বহিস্কৃত এবং ডেপুটেশনে অন্যত্র কাজ করছে ৪জন। এনিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কাগজপত্রে ৩৮টি পদ শূণ্য থাকলেও সর্বমোট ৪৩টি পদ শূণ্য রয়েছে।
শূণ্যপদ গুলোর মধ্যে প্রথম শ্রেনীতে- উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা-১, জুনিয়র কনসালটেন্ট সার্জারী-১, জুনিয়র কনসালটেন্ট গাইনী অব্স-১, জুনিয়র কনসালটেন্ট এ্যানেসথিয়া-১, মেডিকেল অফিসার (হোমিওপ্যাথিক)-১, সহকারী সার্জন-৩ (ডেপুটেশন-২, বহিস্কৃত-১)। তৃতীয় শ্রেনীতে- চিকিৎসক সহকারী-২, চিকিৎসক সহকারী নবসৃষ্ট-৫, ফার্মাসিস্ট-২, মেডিকেল টেকনোলজিষ্ট (ল্যাব)-২, ডেন্টাল-১, সহকারী নার্স-১, ক্যাশিয়ার-১, স্টোর কিপার-১, অফিস সহকারী-১, গাড়ী চালক-১, মেডিকেল টেক (এস.আই)-১, স্বাস্থ্য সহকারী-৭। চতুর্থ শ্রেনীতে- জুনিয়র মেকানিক-১, অফিস সহায়ক-৩, ওয়ার্ড বয়-১ (ডেপুটেশন), নিরাপত্তা প্রহরী-১, বাবুচর্ী-১, মালী-১, গার্ডেনার-১, পরিচ্ছন্নতা কর্মী-১ (ডেপুটেশন)।
সিলেটের অন্যান্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চাইতে নানা কারনে জনগুরুত্বপূর্ণ প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ এম.পির নিজ উপজেলা জৈন্তাপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ৪৩টি পদ শূণ্য থাকায় সেবা নিতে আসা রোগীরা প্রতিনিয়ত চরম দূর্ভোগ স্বীকার হচ্ছে।
পাশবতর্ী উপজেলা গোয়াইনঘাটের পূর্ব জাফলং ইউপি, আলীরগঁাও ইউপি এবং কানাইঘাট উপজেলার চতুল ইউপি’র রোগীরা জৈন্তাপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সেবা গ্রহন করে। তাছাড়া সিলেট-তামাবিল মহাসড়ক এবং তামাবিল স্থল বন্দর থাকায় যখন তখন দূর্ঘটনায় আহত এবং স্থল বন্দরের রোগীদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা সেবা নিতে হয়।
উপজেলার বাসিন্দা সিরাজুল ইসলাম, আব্দুর রহমান, বাবুল মিয়া, ইন্তাজ আলী, খায়রুল ইসলাম, নাজমুল ইসলাম সহ একাধিক ব্যক্তিরা প্রতিবেদকে বলেন, জনগুরুত্বপূর্ণ পর্যটন ও প্রকৃতিক সম্পদ খ্যাত এবং মন্ত্রী মহোদয়ের নিজ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চিকিৎসা সেবা বঞ্চিত হচ্ছে রোগীরা। অনেটা বাধ্য হয়ে জেলা শহরে নিতে হচ্ছে রোগীদেরকে। চিকিৎসা সেবা প্রদানে রয়েছে নানা অনিয়ম ও দূর্নীতি। নূন্যতম চিকিৎসা সেবা মিলছে না সেবা প্রদানকারীদের কাছে হতে। টাকা ছাড়া কাজ হয়না এমন অভিযোগ অহরহ। অনিয়ম ও দুনর্ীতি রোধ সহ দ্রুত সময়ের মধ্যে সবকয়েটি পদে লোক নিয়োগ দিয়ে জনগনের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করার দাবী জানান।
জৈন্তাপুর উপজেলা হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য ও জৈন্তাপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সাহকারী অধ্যাপক শাহেদ আহমদ বলেন, ইতোপূর্বে মন্ত্রী মহোদয় কয়েক দফা শূন্য পদের তালিকা চেয়েছিলেন কিন্তু রহস্য জনক কারন হাসপাতাল কতর্ৃপক্ষ শূণ্য পদের তালিকা প্রেরণ করেনি। যার কারেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা বঞ্চিত হচ্ছে রোগীরা।
আবাসিক মেডিকেল অফিসার (ভারপ্রাপ্ত টিএইচও) ডাক্তার মমি দাস বলেন, শূন্য পদের বিষয়টি সংশ্লিষ্ট উদ্বর্তন কতৃপক্ষের মাধ্যমে স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়কে অবহিত করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন পাশবতর্ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হতে উল্লেখিত পদ গুলোতে জনবল বৃদ্ধি করা হয় তাহলে উপজেলা স্বাস্থ্য সেবা বৃদ্ধি পাবে। অনিয়মের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।
জৈন্তাপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি কামাল আহমদ বলেন, বিভিন্ন সময় রোগীর স্বজনরা চিকিৎসা বঞ্চিত হওয়ার অভিযোগ করেছে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। শূন্য পদের বিষয়টি নিয়ে মন্ত্রী মহোদকে জানানো হয়েছে। রোগীদের সুচিকিৎসা এবং সরকারি ঔষধ পায় সে জন্য উপজেলা মাসিক সমন্বয় সভায় আলোচনা করা হবে।