বনানীর আগুনের ঘটনা মনিটরিং করছেন প্রধানমন্ত্রী
আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বনানীতে আগুনের ঘটনা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সার্বক্ষণিক মনিটরিং করছেন। প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনার পাশাপাশি, ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তাদের সঙ্গেও কথা বলে পদক্ষেপ নিতে বলছেন। এ সময় আগুনে ক্ষতিগ্রস্তদের সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে বলে জানান তিনি।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর ধানমণ্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তথ্যমন্ত্রী।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপি খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে রাজনীতি করছে। তারপরও তাঁকে (খালেদা জিয়া) এ ধরনের সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। ফখরুল ইসলাম এবং রিজভীরা সকালে বলেন এক কথা, বিকেলে আরেক কথা। তাঁরা দিনে তিনবার করে কথা বলেন। আবার বলেন ‘দেশে গণতন্ত্র নেই, কথা বলার অধিকার নেই।’ তাহলে তারা সরকারের সমালোচনা করছেন কিভাবে, প্রশ্ন রাখেন মন্ত্রী।
এর আগে গতকাল বুধবার বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে কারা কর্তৃপক্ষ উদাসীন বলে অভিযোগ করেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। একই সঙ্গে খালেদা জিয়াকে হত্যার পরিকল্পনা করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, যে দলের জন্ম বন্দুকের নলের আগায়, তাদের মুখে গণতন্ত্রের কথা মানায় না। খালেদা জিয়াকে চিকিৎসা দেওয়ার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের কেবিন খালি রাখা হয়েছে। কিন্তু সেখানে তিনি যাননি। অথচ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের তাঁর জীবনের সংকটাপন্ন অবস্থায় সেখানে ভর্তি হয়েছিলেন, সেই হাসপাতালে খালেদা জিয়া চিকিৎসা নেবেন না। তাহলে প্রশ্ন জাগে, বঙ্গবন্ধুর নামের সঙ্গে হাসপাতালের নাম জড়িত বলেই কি তিনি চিকিৎসা নেবেন না?’
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর উদ্দেশে তথ্যমন্ত্রী বলেন, তিনি একবার বলেন, পরিত্যক্ত কারাগার ভবনে খালেদা জিয়াকে রাখা হয়েছে। আবার যখন তাঁকে নতুন কারাগারে স্থানান্তরের কথা বলা হচ্ছে, তখন তিনি বলছেন নির্মাণাধীন কারাগারে খালেদা জিয়াকে রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। তাহলে কি খালেদা জিয়াকে পাঁচতারকা হোটেলে রাখতে হবে?’
এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী নেতা এস এম কামাল হোসেন, সুজিত রায় নন্দী, ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়য়া, মারুফা আক্তার পপি, রেমন্ড আরেং, শামসুন নাহার চাঁপা প্রমুখ।
এদিকে বার্তা ইউএনবির এক খবরে বলা হয়েছে, রাজধানীর বনানীতে এফ আর টাওয়ারের ভয়াবহ আগুনে জীবন ও সম্পদহানির ঘটনায় বৃহস্পতিবার গভীর শোক প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই সঙ্গে তিনি আহতদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম বলেন, প্রধানমন্ত্রী উদ্ধার অভিযান ও আহতদের চিকিৎসা বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন।
এর আগে শেখ হাসিনা আগুন নেভানো ও উদ্ধার অভিযান পরিচালনায় ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করতে সশস্ত্র বাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীগুলোকে নির্দেশ দেন। তিনি আগুনে নিহতদের শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা, তাদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত ও আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করেছেন।
বহুতল ভবন এফ আর টাওয়ারের ভয়াবহ আগুনে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৯ জনে দাঁড়িয়েছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার পর ঘটনাস্থলে ১৩ জনের লাশ পাওয়া যায়। এর আগে দুপুর পৌনে ১টার দিকে ২২ তলা ভবনটিতে আগুন লাগে।