আবাদি জমি রক্ষায় গবেষণা চান প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জ্বালানি খাতে বিদ্যুৎ প্রকল্পসহ অবকাঠামো নির্মাণে আবাদি জমি রক্ষায় ব্যাপক গবেষণার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন।
আজ মঙ্গলবার জার্মান পার্লামেন্টের একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী এ ব্যাপারে সেই দেশের সহায়তা কামনা করেন।।
সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর সংসদ ভবন কার্যালয়ে বৈঠক শেষে প্রেস সচিব ইহসানুল করিম এ ব্যাপারে সাংবাদিকদের অবহিত করেন। তিনি বলেন, ‘জার্মান পার্লামেন্টের ভাইস প্রেসিডেন্ট ক্লাউদিয়া রুথ এমপি প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন।’
দেশে খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির বিস্তারিত পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী জানান, তাঁর সরকার কৃষি খাতে গবেষণার ওপর ব্যাপক গুরুত্বারোপ করেছে। এ কারণে জনগণ এখন বছরব্যাপী সবজি পাচ্ছে। শেখ হাসিনা জানান, তাঁর সরকার সম্ভাব্য প্রাকৃতিক দুর্যোগকে মাথায় রেখে দেশে সব উন্নয়ন কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে।
বিদ্যুৎ খাতে উন্নয়ন প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী জানান, তাঁর সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কারণে দেশে এখন ২০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘সোলার সিস্টেমের মাধ্যমে প্রত্যন্ত এলাকায় আমরা বিদ্যুৎ সরবরাহের ব্যবস্থা করেছি।’
প্রধানমন্ত্রী জানান, জনগণের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে তাঁর সরকার নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। তিনি বলেন, ‘আমরা ভূমিহীনদের ভূমি দিচ্ছি এবং গৃহহীনদের জন্য ঘর নির্মাণ করছি।’
শেখ হাসিনা জানান, ব্যাপক শিল্পায়ন এবং কর্মসংস্থানে তাঁর সরকার দেশে একশটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গঠন করেছে। তিনি বলেন, ‘প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় ড্রেজিংসহ আমরা বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি।’ এ প্রসঙ্গে তিনি সরকারের জলবায়ু তহবিল গঠনের কথাও উল্লেখ করেন। শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষতির শিকারের পরিণত হয়েছে, যদিও এ জন্য বাংলাদেশ দায়ী নয়।’
জার্মান পার্লামেন্টারি দল এ মাসে মিউনিখ সিকিউরিটি কনফিডেন্সে যোগ দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান। তারা বিশ্বব্যাপী জলবাযু পরিবর্তনজনিত ক্ষতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তাঁর উদ্যোগের উচ্ছৃসিত প্রশংসা করেন।
গত কয়েক বছরে বাংলাদেশের অসামান্য উন্নয়নের কথা উল্লেখ করে জার্মান পার্লামেন্টারি প্রতিনিধিদলের সদস্যরা বলেন, ‘এ দেশের মানুষ এক সময় বিভিন্ন সমস্যায় ভোগান্তির শিকার হয়েছে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গত কয়েক বছর সকল খাতে বাংলাদেশে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। ফলে জনগণের দুঃস্বপ্নের অবসান ঘটেছে।’
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব মো. নজিবুর রহমান এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত জার্মান রাষ্ট্রদূত উপস্থিত ছিলেন।
পরে ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক হেনরিয়েটা এইচ. ফোরে একই স্থানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। ইউনিসেফ নির্বাহী পরিচালক জানান, তাঁর সংস্থা জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের জন্য সহায়তা অব্যাহত রাখবে। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতের দক্ষতা বৃদ্ধি এবং যুবকদের বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণে ইউনিসেফ সহায়তা প্রদান করবে।
ইউনিসেফকে বাংলাদেশের ভাল বন্ধু হিসেবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এ সংস্থা স্বাধীনতার পর থেকে সহায়তা দিয়ে আসছে।’ ভবিষ্যতে বাংলাদেশের উন্নয়নে জাতিসংঘের এই সংস্থাটি তাদের সহায়তা অব্যাহত রাখবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
এ সময় প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব মো. নজিবুর রহমান এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব সাজ্জাদুল হাসান উপস্থিত ছিলেন।