Sobujbangla.com | সিলেট বিভাগে স্বাস্থ্যসেবা বন্ধের হুংকার।
News Head

সিলেট বিভাগে স্বাস্থ্যসেবা বন্ধের হুংকার।

  |  ১৯:২১, ডিসেম্বর ২৯, ২০২১

হবিগঞ্জ শহরের আধুনিক হাসপাতালের মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ল্যাব টেকনোলজিস্ট) সাইফুল ইসলামকে কুপিয়ে হত্যায় জড়িতদের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার করা না হলে সিলেট বিভাগে স্বাস্থ্যসেবা বন্ধ করে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। বুধবার দুপুরে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালের সামনে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সভায় এ ঘোষণা দিয়ে সিলেট বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক হিমাংশু লাল দাশ বলেন, নিরীহ এক স্বাস্থ্যকর্মীকে প্রকাশ্যে রাস্তায় পিটিয়ে মেরে ফেলা হলো। এ ঘটনায় আমরা অত্যন্ত মর্মাহত হয়েছি। আমরা তীব্র প্রতিবাদ জানাই এবং জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তারের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি অনুরোধ জানাই। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে জড়িতদের গ্রেপ্তার করা না হলে স্বাস্থ্যসেবা বন্ধ করে দেয়া হবে। বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) হবিগঞ্জ জেলার সভাপতি মুশফিক হোসেন চৌধুরী বলেন, সাইফুল ইসলাম করোনার সময় হাজার হাজার মানুষকে সেবা দিয়েছেন। নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তিনি করোনার নমুনা সংগ্রহ করেছেন। ছেলেটাকে নির্মমভাবে খুন করা হয়েছে। এতে শুধু আমরা স্বাস্থ্যকর্মীরা নই, পুরো হবিগঞ্জের মানুষ মর্মাহত। স্বাস্থ্য বিভাগ যে কর্মসূচির ঘোষণা দেবে, আমরা তাদের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করছি। প্রতিবাদসভা শেষে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন করেন হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। পরে তারা শহরে বিক্ষোভ মিছিল করেন। এর আগে মঙ্গলবার হত্যার প্রতিবাদে ও জড়িতদের শাস্তির দাবিতে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত প্রতিবাদসভা ও মানববন্ধন করেন। হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালের ল্যাব ইনচার্জ আহমেদ ইমতিয়াজ তুহিন জানান, ‘সাইফুলের মা-বাবা কেউ বেঁচে নেই। তিনি নবীগঞ্জের পুরানগাঁও গ্রামের তাহমিনা বেগম চৌধুরী নামে এক নারীকে ধর্ম মা ডেকেছেন। মঙ্গলবার দুপুরে তিনি (তাহমিনা) সদর হাসপাতালে করোনা টিকা নিতে আসেন। টিকা নেয়া শেষে সাইফুল তাকে নিয়ে রিকশায় করে নবীগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড যাচ্ছিলেন। পথমধ্যে শহরের টাউন হল এলাকায় কয়েকজন যুবক তাকে পিটিয়ে পালিয়ে যায়। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাৎক্ষণিক উন্নত চিকিৎসার জন্য সিলেটে ওসমানী মেডিকেল কলেজে পাঠানো হয়। সেখানে নিয়ে যাওয়া পথে সাইফুল মারা যান। সাইফুলের সঙ্গে থাকা তাহমিনা বেগম চৌধুরী বলেন, দুপুরে দুই যুবক রক্ত দিতে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে আসে। এ সময় সাইফুলের সঙ্গে তাদের কথা-কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে তারা সাইফুলকে দেখে নেয়ার হুমকি দিয়ে চলে যায়। সাইফুল আমাকে গাড়িতে তুলে দিতে রিকশা দিয়ে নবীগঞ্জ বাস স্ট্যান্ডের উদ্দেশে রওনা হয়। টাউনহল রোড এলাকার জুনিয়র হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজের রাস্তার প্রবেশমুখে রিকশা থেকে হঠাৎ তাকে টেনে নামায় এক যুবক। এ সময় পেছন থেকে আরও এক যুবক বড় একটি বাঁশ দিয়ে তার মাথায় আঘাত করে। এরপর তারা সাইফুলকে মাটিতে ফেলে আবারও মারতে থাকে। তিনি বলেন, যখন তারা সাইফুলকে মারছিল তখন সাহায্যের জন্য কেউ এগিয়ে আসেনি। দুই যুবক সাইফুলকে মেরে চলে যাওয়ার পর লোকজন এসে হাসপাতালে নিয়ে যায়। হবিগঞ্জ সদর থানার ওসি (তদন্ত) ফেরদৌস মোহাম্মদ বলেন, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত মামলা হয়নি। আমরা কয়েকটি সিসিটিভির ফুটেজ সংগ্রহ করেছি। সেখান থেকে হত্যাকারীদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ