পর্যটকদের ডাকছে শহীদ সিরাজ লেক।
লেকের তিন দিকে সবুজ মাঠে আছে ছোট ছোট টিলা,উত্তরে ভারতের মেঘালয়ে নীল পাহাড়ে ঘেরা সবুজের সমারোহ,তার উপরে আকাশে ভেসে বেড়ানো সাদা মেঘেরবেলা,লেকের স্বচ্ছ পরিষ্কার নীল জলে তার প্রতিছবি নিজস্ব স্বকীয়তায় আর মনজুড়ানো সুন্দর্যে আরো আকর্শনীয় করে তুলছে আগত দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা পর্যটকগন পর্যটকদের কাছে। এই লেকের সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য প্রতিদিন অনেক পর্যটক আসেন। এসেই প্রশান্তির র্দীঘ নিঃস্বাস ফেলে মেতে উঠেন আড্ডা,গান আর ছবি তুলার কাজে। নিজস্ব স্বকীয়তায় সবুজ বনানী,উচুঁ নিচু পাহাড়ী,টিলা ও মেঘালয় পাহাড় নিয়ে আকর্শনীয় হয়ে উঠেছে দিন দিন আর এমনি দৃশ দেখা যায়,সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলা সীমান্তের উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের ভারতের মেঘালয় পাহাড় সংলগ্ন শহীদ সিরাজ লেকটিতে। পর্যটকগন টাংগুয়ার হাওর,বারেকটিলা,হলহলিয়া রাজবাড়ি,যাদুকাটা নদীসহ উপজেলার বিভিন দর্শনীয় পর্যটন স্পট দেখার পাশা পাশি মেঘালয় পাহাড় সংলগ্ন এই লেকটি দেখতে সৌন্দুর্য পিপাসু হাজার হাজার লোকজন আসছে সুন্দর্য উপভোগ করতে এই উপজেলার। জানাযায়, সীমান্তবর্তী ট্যাকেরঘাট চুনাপাথর খনিজ প্রকল্পের পরিত্যক্ত এই কোয়ারী থেকে ১৯৪০সালে চুনাপাথর সংগ্রহ শুরু হয়। ১৯৪৭সালে দেশভাগের পর কোয়ারী থেকে চুনাপাথর উত্তোলন বন্ধ হয়ে যায়। পরে ১৯৬০সাল থেকে আবারও পাথর উত্তোলনের কাজ শুরু হয়। ৬ বছর মাইনিংয়ের মাধ্যমে খনিজ পাথর উত্তোলন হয়ে ১৯৯৬ সালে আবারো বন্ধ হয়ে যায়। চুনাপাথর সংগ্রহ করতে গিয়ে খুড়াখুড়ির ফলে ৩দিকে টিলা ও এই লেকের সৃষ্টি হয়েছে। এর পর এই গভীর কোয়ারীতে পানি জমতে থাকে একময় কানায় কানায় পরিপূর্ন হয়ে উঠে এই কোয়ারীটি। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে ৫নং সেক্টরের টেকেরঘাট সাব-সেক্টরের হেডকোয়ার্টার ছিলো তাহিরপুরের টেকেরঘাট। এখান থেকেই মুক্তিবাহিনীর যোদ্ধারা ভাটি অঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে যুদ্ধ পরিচালনা করতেন। টেকেরঘাট থেকে যুদ্ধে গিয়ে বহু মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হয়েছেন তাঁদের অনেকের লাশ টেকেরঘাটেই সমাহিত করা হয়েছে। এদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন শহীদ সিরাজ বীরবিক্রম। যিনি পার্শ্ববর্তী জামালগঞ্জ থানা মুক্ত করতে গিয়ে প্রাণ বিসর্জন দিয়েছেন। তাঁর প্রতি সম্মান জানিয়ে পরিত্যক্ত লাইম স্টোন কোয়ারির লেকের নামকরণ করা হয়েছে শহীদ সিরাজ লেক। ২০১৭ সালে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড এর অর্থায়নে শহীদ সিরাজ লেকের উন্নয়ন কাজের ভিত্তিপ্রস্তর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন তৎকালীন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাবিরুল ইসলাম। লেকসহ পুরো এলাকায় পর্যটকদের বসায় চেয়ার,বাচ্চাদের দোলনা স্থাপন করা হয়। পর্যটনকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে নতুন নতুন রেস্টুরেন্ট। এতে অনেকে স্বাবলম্বী হচ্ছেন। তবে দৃষ্টি নন্দন শহীদ সিরাজ লেকটি সীমান্ত ঘের্ষা পাহাড় ও হাওর সংলগ্ন সুর্ন্দযে পরিপূর্ন হওয়ায় হাজার হাজার পর্যটকদের আগমন গঠছে প্রতিদিন। যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত না থাকায় পর্যটকদের কাছে এর নিজস্ব সুন্দর্য অধরাই রয়েই যাচ্ছে।