আলোচিত মেজর সিনহা হত্যা মামলার রায় আজ
বিচার শুরুর প্রায় ছয় মাসের মাথায় আজ (সোমবার) ঘোষণা হতে পারে বহুল আলোচিত অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ হত্যা মামলার রায়। কক্সবাজার জেলা আদালত এ রায় দেবেন। মামলার ১৫ আসামির ১২ জনই আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্য। বাদী ও আসামি দুপক্ষের আশা ন্যায় বিচারের। ভ্রমণ বিষয়ক তথ্যচিত্র তৈরি করতে পর্যটন জনপদ কক্সবাজারে গিয়েছিলেন সাবেক সেনা কর্মকর্তা সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ। কিন্তু ফিরতে পারেননি প্রাণ নিয়ে। ২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাত। তথ্যচিত্রের কাজ শেষে শহরে ফেরার পথে টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের বাহারছড়া চেকপোষ্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সিনহা রাশেদ। আটক হন তার দুই সঙ্গী সিফাত ও শিপ্রা। মাদক সংক্রান্ত ঘটনা দেখিয়ে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করে পুলিশ। এ নিয়ে দেশজুড়ে সৃষ্টি হয় তোলপাড়। ছয়দিন ধরে চলে নানা নাটকীয়তা। তবে ঘটনার মোড় ঘুরে যায় ৫ আগষ্ট সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়া আদালতে পরিকল্পিত হত্যার অভিযোগে মামলা করার পর। এই মামলায় আসামী করা হয় টেকনাফ থানার তৎকালীন ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, বাহারছড়া ফাঁড়ির ইনচার্জ লিয়াকতসহ ৯ জনকে। ৬ আগষ্ট আদালতে আত্মসমর্পণ করেন ওসি প্রদীপসহ সাত পুলিশ সদস্য। এরপর ধরা পড়ে বাকিরাও। মামলার তদন্ত ভার পায় র্যাব। আদালতে একে একে দায় স্বীকার করে ১২ আসামি। চার মাস তদন্ত শেষে একই বছরের ১৩ ডিসেম্বর ১৫ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় র্যাব। যার ১২ জনই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য। সাক্ষী করা হয় ৮৩ জনকে। পুলিশের করা তিনটি মামলায় অব্যাহতি পান সিনহার সঙ্গী সাইদুল ইসলাম সিফাত ও শিপ্রা দেবনাথ। গত বছরের ২৩ আগষ্ট থেকে শুরু হয় আলোচিত এই হত্যা মামলার বিচার কাজ। পহেলা ডিসেম্বর পর্যন্ত ৮ দফায় ৬৫ জনের সাক্ষ্য ও জেরা সম্পন্ন হয়। চলতি বছরের নয় থেকে ১২ জানুয়ারি উপস্থাপন হয় যুক্তি তর্ক। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ফরিদুল আলম বলেন, পূর্ব পরিকল্পিতভাবে অব. মেজর সিনহাকে নিমর্মভাবে হত্যা করেছে। সেটা আমরা আদালতের সামনে সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে পেরেছি। তবে সাক্ষ্য ও এজাহারে নানা গরমিল তুলে ধরে ন্যায় বিচার পাওয়ার আশা আসামি পক্ষের আইনজীবীর। আসামি পক্ষের আইনজীবী মহি উদ্দিন বলেন, সাক্ষ্যর সঙ্গে বিজ্ঞ আদালতে বাদী পক্ষে দাখিলের যে এজাহার এবং তদন্তকারী কর্মকর্তা কর্তৃক যে তদন্ত প্রতিবেদন রয়েছে (অভিযোগপত্র) সে তদন্ত প্রতিবেদনের সঙ্গে যথেষ্ট গড়মিল রয়েছে। আমরা বিজ্ঞ আদালতে সেই গড়মিলগুলো উপস্থাপন করেছি। এজন্য বিজ্ঞ আদালত থেকে আমরা ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করি। সিনহা হত্যায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ৫ সদস্যের একটি কমিটি তদন্ত রির্পোট জমা দিলেও তার প্রতিবেদন প্রকাশ হয়নি এখনও। তবে এ ঘটনার পর বদলি করা হয় কক্সবাজারের এসপিসহ দেড় হাজার পুলিশ সদস্যকে।